ফাইল চিত্র।
নিউ কোচবিহারের মতো একটি স্টেশন থেকে কেন একটি মাত্র ট্রেন চলবে, এই প্রশ্ন তুলছেন এ বারে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের যুক্তি, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে একাধিক ট্রেন কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করছে। আলিপুরদুয়ার জংশন থেকেও একাধিক ট্রেন রয়েছে। বিক্ষুব্ধ মানুষের প্রশ্ন, কোচবিহারকে তবে কেন ‘ব্রাত্য’ করে রাখা হয়েছে? ট্রেন না থাকার ফলে কোচবিহার তো বটেই, নিম্ন অসমের বহু মানুষ প্রতিদিন চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। বিশেষ করে, পুজোর সময় তাঁদের সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যায়।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজেও সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কোচবিহার থেকে কলকাতা পর্যন্ত শীঘ্রই একটি ট্রেন প্রয়োজন। সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই রেল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। তা নিয়ে ফের দরবার করা হবে।”
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর আলিপুদুয়ারে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজারের আসার কথা রয়েছে। সেখানে তাঁর কাছেও ওই দাবি পেশ করার কথা জানিয়েছেন কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, “ট্রেন সমস্যায় কোচবিহারের মানুষ জেরবার। নতুন ট্রেন প্রয়োজন। এ ছাড়াও স্টেশনকে ঘিরে আরও কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। যাতে এই অঞ্চলের মানুষ সঠিক ভাবে রেল যাতায়াতের সুবিধে পায়। রেলের জেনারেলের কাছে সে সব তুলে ধরা হবে।”
নিউ কোচবিহারের দিয়ে একাধিক ট্রেন অসমের গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় থেকে ত্রিপুরার আগরতলা-সহ নানা স্টেশনে যাতায়াত করে। এই প্রান্তিক জেলার মানুষদের মূলত এই ট্রেনগুলোর উপরেই নির্ভর করে থাকতে হয়। প্রয়োজনে রাজধানী শহর কলকাতায় আসতে, বাইরে চিকিৎসা করাতে, পড়াশোনা বা অন্য কাজের জন্য ভিনরাজ্যেও যাতায়াত করতে হয় অনেককে। কাজের সূত্রে নিয়মিত দক্ষিণ ভারত, দিল্লি, রাজস্থানে যেতে হয় বাসিন্দাদের। কোচবিহার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “কলকাতার পাশপাশি দূরপাল্লার বেশ কিছু ট্রেন প্রয়োজন রয়েছে। সমীক্ষা করে তা চালু করা হোক। সেই সঙ্গে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনে কোচবিহারের টিকিট কোটাও বাড়ানো দরকার।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর সময় বা বিশেষ কোনও ছুটির সময় ট্রেনে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রয়োজনের তুলনায় কোটার টিকিট সব সময়ই কম পড়ে। এই সমস্ত সময়ে আরও বেশি সমস্যা হয়। সংরক্ষিত কামরার টিকিট না পেয়ে অনেকেই জেনারেল কামরায় উঠে পড়েন। প্রায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর-ঘণ্টা সফর করতে হয় বাসিন্দাদের।
চিত্রশিল্পী শ্রীহরি দত্ত বলেন, “আমি নিজে একাধিক সময় কলকাতা যাওয়ার সময় এমন সমস্যায় পড়েছি। টিকিট না পাওয়ায় যাতায়াতের তারিখ পিছিয়ে দিতে হয়েছে। ট্রেনের দাবিতে সব মানুষকে এক হওয়া প্রয়োজন। না হলে এই সমস্যা মিটবে না।”
ট্রেনের দাবিকে সম্মিলিত কণ্ঠে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সামনে রাখতে এখন তোড়জোড় চলছে আলিপুদুয়ারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy