Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খোলা তারে শিয়রে শমন

এই সব দেখেশুনে প্রশ্ন উঠেছে, একবার আগুন লাগার পরেও কি এই সব সামলানোর ব্যাপারে হুঁশ আছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কর্তৃপক্ষের?    

 বিপদ: এই ভাবেই খোলা তার ঝুলছে। নিজস্ব চিত্র

বিপদ: এই ভাবেই খোলা তার ঝুলছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৫
Share: Save:

করিডর সংস্কার কাজ চলায় বিভিন্ন জায়গায় খোলা অবস্থায় রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইন। সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটের কাছে করিডরে বিপজ্জনক অবস্থায় বৈদ্যুতিক তার ঝুলছে। হাসপাতাল সুপারের দফতরের দোতলায় যে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এ মাসখানেক আগে ভেন্টিলেটরে আগুন লেগেছিল, তার নীচ তলাতেই বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ ব্যবস্থা খোলা অবস্থায় রয়েছে। করিডর হয়ে ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরের সামনে দিয়ে যাতায়াত করতে সেই তার অনেকের মাথায় লাগছে। কাছেই অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করার ঘর। করিডরেও অনেক সময় সিলিন্ডার নামিয়ে রাখা হয়। তা দেখে রোগীর আত্মীয়দের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই সব দেখেশুনে প্রশ্ন উঠেছে, একবার আগুন লাগার পরেও কি এই সব সামলানোর ব্যাপারে হুঁশ আছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কর্তৃপক্ষের?

হাসপাতাল সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘নির্মাণ কাজ চলায় এ সব সমস্যা হচ্ছে। তবে যাঁরা কাজ করাচ্ছেন, সেই পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলছি।’’ কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসে অবশ্য হাসপাতালের চিকিসক, কর্মীদের বেশিরভাগই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। কেন না, কয়েক মাস ধরেই তাঁরা এই অবস্থাটা চোখের সামনে দেখে আসছেনে। আর দেখছেন, এই ছবির কোনও বদল নেই।

অভিযোগ, হাসপাতালের মেডিসিন, প্রসূতি বা শিশু বিভাগ, যেখানেই করিডর সংস্কারের কাজ চলছে, সেখানেই বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। সেগুলোর যথেষ্ট বয়সও হয়েছে। ফলে বিপদের আশঙ্কা বেড়েছে। এসএনসিইউ’র পিছনের অংশের দেওয়ালে নির্মাণ কর্মীরা যে বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবস্থার ফিউজ় বসিয়েছেন, তা এখনও খোলা। তার কাছেই শুকনো ঝোপ-জঙ্গল। কোনও কারণে কোনও বিপজ্জনক তার থেকে শর্ট সার্কিট হলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় আশঙ্কা রয়েছে। যাঁরাই এই খোলা তারগুলি দেখছেন, তাঁরাই একই কথা বলছেন। রোগীদের আত্মীয়েরা যে বিশ্রামাগারের বসেন, তার কাছেই ক্যাম্পাসে অন্তত ১৫০টি দোকান বসে। গোটা এলাকা যেন বাজারের চেহারা নিয়েছে। খাবারের হোটেল, চায়ের দোকানগুলোয় রয়েছে গ্যাস সিলিন্ডারও। সব মিলিয়ে তাই যে কোনও সময় বড় অঘটন হতে পারে বলে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরাও আতঙ্কে থাকেন।

হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও যথাযথ নেই। নতুন জলাধার তৈরি করা হলেও তা চালু হয়নি। করিডরগুলোর অনেক জায়গাতেই কোনও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তাই ‘ভগবানই ভরসা’ বলে মনে করেন দীপক মজুমদার, মিলন বারুইদের মতো রোগীর আত্মীয়েরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE