শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল ছবি
জমি মাফিয়াদের সঙ্গে যোগসাজশ ও কালো টাকা থাকার অভিযোগ তোলায় শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে আইনি নোটিশ পাঠালেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘গত ২৭ অগস্ট একটি সংবাদ মাধ্যমে মেয়র বলেছিলেন, বিরোধী দলনেতার জমি মাফিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এবং তাঁর প্রচুর কালো টাকা রয়েছে। তা ঘোরতর মিথ্যে। ১০ দিনের মধ্যে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি মানহানির মামলা করা হবে।’’ ১২ সেপ্টেম্বর এই চিঠি পাঠিয়েছেন বিরোধী দলনেতার আইনজীবী অত্রি শর্মা।
গত কয়েকমাস ধরে বেশ কযেকটি বিষয়ে বাম পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তার জেরে পুরসভার শাসক-বিরোধী তরজা চলছিল। এর মধ্যেই মেয়র ওই মন্তব্য করেন বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। মেয়রকে পাঠানো চিঠিতে রঞ্জনবাবুর আইনজীবী দাবি করেছেন, মেয়রের ‘ইচ্ছাকৃত’ ওই মন্তব্যে রঞ্জনবাবুর নৈতিক চরিত্রের উপর প্রশ্ন উঠেছে এবং সম্মানহানির জেরে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়েরও ক্ষতি হয়েছে। জানানো হয়েছে, বুধবারই রেজিস্ট্রি ডাকে মেয়রের বাড়ি এবং দফতরের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে ওই চিঠি।
এই বিষয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চিঠি এখনও পাইনি। চিঠি পেলে আইনি ভাষাতেই তার জবাব দেব।’’ এর আগে অন্য একটি প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধেও মানহানির মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ওই চিঠি পাঠানো হবে বলেও বৃহস্পতিবার দাবি করেন মেয়র।
এ দিন বিরোধী কাউন্সিলরদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেন রঞ্জন সরকার। বৈঠকের পরে হাউজিং ফর অল প্রকল্পে বেশ কিছু উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে তাঁদের কাছে প্রথম কিস্তির টাকা ফেরত চাওয়ার নিন্দা করেন রঞ্জনবাবু। প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সমীক্ষা বহির্ভূতভাবে ২৪৮টি নাম প্রাপক তালিকায় ঢুকেছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। তার পরেই সেই সমস্ত উপভোক্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে পুরসভা। তাঁদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়ে তাদের কাছে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা ফেরত চাওয়া হয়।
রঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সাধারণ মানুষের অধিকার অন্যায়ভাবে কেড়ে নিচ্ছে পুরসভা। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে ওই পরিবারগুলিকে নিয়ে এসে মেয়রের ঘরের সামনে ধরনায় হাজির করব।’’ ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর মেয়রের ঘরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল। বিরোধী দলনেতার দাবি, অন্তত ১০০ উপভোক্তা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম কিস্তির টাকা এখন ওই গরিব মানুষেরা কীভাবে ফেরত দেবেন?’’ তাঁদের অবিলম্বে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ৮৭৬ জন উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে ৬০ হাজার টাকা করে প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকেছিল। সেগুলিই ফেরত চাওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘আমরা কাজ চালিয়ে যেতে চাই। কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি ব্যবস্থা নিয়েছে। তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy