Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মালিককে মারধর, ধৃত শ্রমিক নেতা 

রাজগঞ্জ থানার করতোয়া অঞ্চলে এই চা কারখানাটিতে প্রায় ছ’মাস ধরে স্থানীয় আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মালিকপক্ষের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছিলেন বলে অভিযোগ।

আহত: সতীশ আগরওয়াল (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

আহত: সতীশ আগরওয়াল (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

অর্জুন ভট্টাচার্য
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২০
Share: Save:

এর আগে মুখ্যমন্ত্রী বলে গিয়েছিলেন, শিল্পের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তোলাবাজদের হুমকির মুখে যাতে পড়তে না হয়, সে জন্য মঙ্গলবারই বিভিন্ন কারখানার মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজগঞ্জ থানার একটি চা কারখানায় বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকরা। যে বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র বিরুদ্ধেই। সংগঠনের সদস্যরা অবশ্য অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মালিকের দিকেই। উল্টো দিকে, মালিকের দাবি, বিক্ষোভ এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে এক সময়ে আগুন জ্বেলে কারখানার একাংশ জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও হয়।

রাজগঞ্জ থানার করতোয়া অঞ্চলে এই চা কারখানাটিতে প্রায় ছ’মাস ধরে স্থানীয় আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মালিকপক্ষের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছিলেন বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপারের কাছে মঙ্গলবার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংগঠনের তরফে অভিযোগও জানানো হয়। সেই দলে এই কারখানার মালিক সতীশ আগরওয়ালও ছিলেন।

কেন পুলিশ সুপারকে অভিযোগ জানানো হয়েছে, এই প্রশ্ন তুলে বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ স্থানীয় আইএনটিটিইউসি-র নেতারা সতীশের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। সতীশ বলেন, ‘‘এ দিন আচমকাই আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা সাবুল মহম্মদের নেতৃত্বে কারখানায় আক্রমণ চালানো হয়। তাঁরা কারখানার ম্যানেজার বাপ্পা গুহ এবং আমাকে আক্রমণ করেন। আমি মালিক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে রাজগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, ওই নেতারা কারখানায় সঠিক ভাবে কাজ করতে দিচ্ছেন না। তাঁদের উস্কানিতে শ্রমিকরাও ঠিকঠাক কাজ করছেন না। কারখানার উৎপাদন কমে যাচ্ছিল।

আইএনটিটিইউসি-র রাজগঞ্জ ব্লকের সম্পাদক সাবুল মহম্মদ বলেন, ‘‘শ্রম আইন মানতেন না মালিক। শ্রমিকদের দিয়ে কারখানার বর্জ্য, আবর্জনা সাফাই করানো হত। এই নিয়েই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’’

সাবুলকে পরে গ্রেফতার করা হয়। সঙ্গে আরও চার জনকে। এসপি অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘শিল্প ক্ষেত্রে কোনও রকম দাদাগিরি বরদাস্ত করা হবে না।’’ তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে ডিএসপি হেড কোয়ার্টারকে পাঠানো হয়েছে তদন্তের জন্য। এর আগেও ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে এক কারখানায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ। এসপি-র বক্তব্য, ‘‘তখনও পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করায় বর্তমানে কারখানায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। এ ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তোলাবাজি ও সিন্ডিকেট নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে যাওয়ার পর থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি সামলানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri Crime Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE