Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Tax Receiver

ভাতা না বাড়লে আত্মহত্যা, মমতাকে চিঠি

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন মালদহ জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কর আদায়কারীরা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫৪
Share: Save:

আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন মালদহ জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কর আদায়কারীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদহের জেলা মুখ্য ডাকঘরে রেজিস্ট্রি করে প্রায় দেড়শো কর আদায়কারী মুখ্যমন্ত্রীর নবান্নের ঠিকানায় ওই চিঠি পাঠান। তাঁদের অভিযোগ, সরকারের কাছে অনেক বার আবেদন করলেও তাঁদের সান্মানিক বাড়ানো হয়নি। প্রতি মাসে মাত্র ৬০০ টাকা ভাতা দেওয়া হয়। কর আদায়ের ভিত্তিতে কিছু কমিশন অবশ্য রয়েছে। কিন্তু ওই টাকায় সংসার চলে না। সংসার চালানোর মতো মাসিক সাম্মানিক না মিললে তাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে জানিয়েছেন।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তিনটি পদ ছিল। সচিব, চৌকিদার ও কর আদায়কারী। পশ্চিমবঙ্গ গ্রাম পঞ্চায়েত কর আদায়কারী সমিতির অভিযোগ, বামফ্রন্ট আমলে গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব ও চৌকিদারদের চাকরি স্থায়ী করা হলেও কর আদায়কারীদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। বর্তমানে তাঁরা রাজ্য সরকারের তরফে প্রতি মাসে ৬০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির তরফে তাঁদের প্রতি মাসে অতিরিক্ত আরও দেড়শো টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। তার সঙ্গে কর আদায়ের উপর রয়েছে কমিশন।

সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কর আদায় করলে সেই টাকার উপর ১০ শতাংশ কমিশন, ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা কর আদায় করলে তার উপরে ১৫ শতাংশ এবং ৮ হাজার টাকার বেশি কর আদায় করলে ২০ শতাংশ কমিশন মিলে। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে কর আদায়কারীরা ভাতা ও কমিশন মিলিয়ে গড়ে ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা পান।

মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের চরিঅনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কর আদায়কারী হিসেবে ১৯৯২ সাল থেকে কাজ করেন সাধন বসাক। তিনি বলেন, ‘‘স্ত্রী, ছেলেমেয়ে মিলে ৬ জনের সংসার। সামান্য যা ভাতা ও কর আদায়ের উপর কমিশন মিলিয়ে মেলে তাতে সংসার চলে না। স্ত্রীকে দিনমজুরি করতে হয়। এখন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে সরকার ভাতা বাড়ালে আমরা আর বাঁচতে পারব না।’’

একই কথা বলেছেন ১৯৯৬ সাল থেকে কালিয়াচক ৩ ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কর আদায়কারী শামসুল হক, বেদরাবাদ পঞ্চায়েতের কর আদায়কারী পরিতোষ সরকার।

পশ্চিমবঙ্গ গ্রাম পঞ্চায়েত কর আদায়কারী সমিতির রাজ্য সম্পাদক তথা মালদহের যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের কর আদায়কারী নাজিব হাসান বলেন, ‘‘মালদহ জেলার সমস্ত কর আদায়কারী মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন নতুন আর্থিক বছর থেকে সংসার বাঁচানোর মতো মাসিক ভাতা না দেওয়া হলে আত্মহত্যার পথ নিতে বাধ্য হবেন।’’

বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন বা পঞ্চায়ের দফতরের কোন কর্তা মুখ খুলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tax Receiver Panchayet Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE