বিক্ষোভ: সামসি রেলস্টেশনে যাত্রীদের অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
চলন্ত ট্রেন থেকে এক মহিলা যাত্রীর সোনার অলঙ্কার ও তাঁর স্বামীর নগদ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ রাধিকাপুরমুখী আপ রাধিকাপুর একপ্রেসে। বুধবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ স্টেশনের কাছে।
রায়গঞ্জের কলেজপাড়ার বাসিন্দা ভৈরব বর্মণ বারাসতে পূর্ত দফতরে কর্মরত। ভৈরব এ দিন জানিয়েছেন, কালিয়াগঞ্জে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার রাতে কলকাতা স্টেশন থেকে রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী শচীমাতা বর্মণ ও তাঁদের তিন বছরের ছেলে। ওই ট্রেনের স্লিপার কোচের এস-ফোর কামরার এক ও দু’নম্বর আসনে ছিলেন তাঁরা। ভৈরবের স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে মাঝের বার্থে ঘুমিয়েছিলেন। ভৈরব ওই বার্থের নীচের বার্থে ঘুমিয়েছিলেন। স্ত্রীর ব্যাগটি তাঁর মাথার কাছেই ছিল ওই সময়। ভৈরবের অভিযোগ, এ দিন ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ট্রেনটি মালদহ রেল স্টেশন থেকে ছাড়তেই এক ব্যক্তি আচমকা দৌড়ে এসে ওই ব্যাগটি ছিনতাই করে লাফিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যায়। ওই কামরার দরজার সামনের আসনে একজন আরপিএফ কর্মী বসেছিলেন। অভিযোগ, তিনি ওই দুষ্কৃতীকে দেখলেও ওই দুষ্কৃতীকে আটকানোর চেষ্টা করেননি। ভৈরব অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে ওই দুষ্কৃতীর পিছনে ধাওয়া করেন। কিন্তু ওই মুহূর্তেই ট্রেনের গতি বেড়ে যাওয়ায় তিনি ফের ট্রেনে উঠে পড়েন। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ট্রেনটি সামসি স্টেশনে পৌঁছয়। এর পর ভৈরব ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় ঘুরে রেল পুলিশ ও আরপিএফের দেখা পাননি। এরপর ওই স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়তেই তিনি, তাঁর স্ত্রী ও যাত্রীদের একাংশ চেন টেনে ট্রেনটি থামিয়ে দেন।
এর পর ক্ষুব্ধ যাত্রীরা রেল পুলিশ ও আরপিএফের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁরা আরপিএফ ও রেল পুলিশের কর্মীদের কাছে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারের দাবি জানান। সামসি রেল স্টেশনের রেলপুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। ওই ঘটনার জেরে প্রায় দু’ঘণ্টা ট্রেনটি ওই স্টেশনে আটকে থাকে। পরে রেল পুলিশের আশ্বাসে ট্রেনটি রাধিকাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মালদহ রেল পুলিশের (জিআরপি) আইসি ভাস্কর প্রধানের দাবি, আরপিএফ ও জিআরপির বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওই যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মালদহ রেল স্টেশনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওই দম্পতির দাবি, ছিনতাই হওয়া ব্যাগে প্রায় ৭০ গ্রাম ওজনের সোনার অলঙ্কার ও নগদ প্রায় ১০ হাজার টাকা ছিল। সব মিলিয়ে প্রায় দু’লক্ষ টাকার মতো সামগ্রী ছিনতাই হয়েছে। আরপিএফ ও জিআরপির নিষ্ক্রিয়তার জেরেই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে ওই দম্পতির অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy