দুরন্ত গতির জন্য নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি)-হাওড়ার মধ্যে শতাব্দী এক্সপ্রেস যাত্রীদের খুবই পছন্দের। কিন্তু বেখেয়ালের সেই ‘এনজেপি-হাওড়া’ শতাব্দী এক্সপ্রেস এখন যাত্রীদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। কারণ, প্রায় এক মাস ধরে ট্রেনটি মাঝেমধ্যেই অস্বাভাবিক দেরিতে চলাচল করছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, যে ট্রেনের রাত ১০টা ৩০ মিনিটে এনজেপিতে ঢোকার কথা, তা কোনও দিন পৌঁছচ্ছে রাত দুটোয়। আবার কোনও দিন ভোর ৫টায়। ফলে, রোজই যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। গত বুধবার রাতের ট্রেনটি এনজেপি ঢুকেছে ভোর ৩টে নাগাদ। দেরিতে আসার কারণে, এনজেপি থেকে সকাল ৫টা ৩৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও বেলা ৯টা থেকে ১১টার আগে তা ছাড়ছে না। দু’দিকের যাত্রীদের তাই দুর্ভোগ উত্তরোত্তর বেড়েই চলছে। কেন এত দেরি হচ্ছে?
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণব জ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘যাত্রীদের দুর্ভোগ এড়াতে রেল সব সময়ই সচেষ্ট। তবুও নানা কারণে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে থাকে। বিশদে খোঁজখবর চলছে।’’ রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, গত বর্ষায় লাইনের যে সব জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেখান দিয়ে ধীরে চলছে শতাব্দীর মতো দ্রুত গতির ট্রেনগুলি। যেমন, বিহারের তেলতা সেতু।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, এই লাইন দিয়ে তো সব ট্রেনই যায়, তা হলে শুধু শতাব্দী এত দেরি করছে কেন? রেলের একটি সূত্রের খবর, ট্রেনের নিয়মিত দেখভালজনিত কারণে এখন দেরি হচ্ছে। তবে এটা সাময়িক।
কিন্তু, ট্রেনের যাত্রীদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকেই। গত সপ্তাহে শিলিগুড়ির পম্পা কুণ্ডু হাওড়া থেকে ট্রেন ধরতে গিয়ে দেখেন, শতাব্দী কখন ছাড়বে তা বোর্ডে লেখা নেই। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়ার অনুসন্ধান কেন্দ্রে গিয়ে বহুবার জিজ্ঞেস করেও উত্তর পাইনি। শেষ পর্যন্ত দুপুর সোয়া দুটোর ট্রেন ছাড়ল রাত ১০টায়। এনজেপিতে এল ভোর ৫টায়। কয়েক জন বয়স্ককে দেখলাম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’’
বুধবার হাওড়া থেকে ওই ট্রেনে উঠেছিলেন জলপাইগুড়ি সুদীপ্ত চৌধুরী। ভোর ৩টেয় এনজেপি পৌঁছেছেন তিনি। বাকি রাতটুকু এনজেপি স্টেশনে থেকে মশার কামড় খেতে হয়েছে তাঁকে। কারণ, ওয়েটিং রুমে জায়গা ছিল না। এনজেপি জিআরপির কয়েকজন অফিসার জানান, অন্য ট্রেনগুলো মোটামুটি এক-আধঘণ্টা দেরি করলেও শতাব্দীর অস্বাভাবিক বেশি সময় লাগায় যাত্রীদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সামনেই গরমের পর্যটন মরসুম। এ সময়ে রাতের ট্রেন ভোরে পৌঁছলে অনেক সফরসূচি এলোমেলো হয়ে যাবে। রেল মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে মেল পাঠিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy