Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা, তবু মিলল না চিকিৎসা

এ দিন হাসপাতালে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির শিকারপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা পাঙ্খা ওরাওঁ।

ভোগান্তি: চিকিৎসার জন্য এসে দীর্ঘক্ষণের অপেক্ষা হাসপাতালের বারান্দায়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ভোগান্তি: চিকিৎসার জন্য এসে দীর্ঘক্ষণের অপেক্ষা হাসপাতালের বারান্দায়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৪
Share: Save:

ভাঙা পা ঠিকমতো জুড়েছে কিনা দেখাতে হাসপাতালে এসেছিলেন এক চা শ্রমিক। কিন্তু পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসককে দেখাতে পারলেন না ওই ব্যক্তি। পরে বাধ্য হয়ে ডাক্তার না দেখিয়েই তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায় তাঁর পরিবার। সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগের অস্থি-শল্য বিভাগের ঘটনা।

এ দিন হাসপাতালে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির শিকারপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা পাঙ্খা ওরাওঁ। তিনি জানান, গত সেপ্টেম্বরে ওই হাসপাতালে তাঁর ভাঙা পায়ে অস্ত্রোপচার হয়। তখন তাঁর পায়ে একটি স্টিলের পাত ঢোকানো হয়েছিল। তিনি জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই ভাঙা হাড় জুড়েছে কিনা দেখানোর জন্য এ দিন এসেছিলেন। অভিযোগ, সকাল ১০টায় এসে বিকেল তিনটে পর্যন্ত অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে পারেননি তিনি।

পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঙ্খা বলেন, ‘‘৩ সেপ্টেম্বর অপারেশন করেছেন হাসপাতালেরই ডাক্তার। তিনিই বলেছিলেন, তিন মাস পরে গিয়ে দেখাতে হবে। সেই মতো গিয়েছিলাম। কিন্তু, টিকিট কেটে অপেক্ষা করেও ডাক্তারের কাছে যেতে পারিনি। ভীষণ ভিড় ছিল। ঘণ্টাদুয়েক পরে একজন স্বাস্থ্যকর্মী ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে স্লিপে এক্স-রে করানোর জন্য লিখে দেন।’’ ডিজিটাল এক্স রে-এর ঘরের সামনে তখন ৩০-৪০ জন রোগীর ভিড়। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক দাঁড়ানোর পরে পাঙ্খার বাড়ির লোকজন তাঁকে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে এক্স রে করান। সেই রিপোর্ট হাতে পেতেই বেলা ৩টে বেজে যায়। ততক্ষণে বহিবির্ভাগ থেকে ডাত্তার চলে গিয়েছেন। এর পরে বাধ্য হয়ে রোগীকে নিয়ে শিকারপুর ফিরে যেতে হয় পরিবারের লোকজনকে। তাঁরা জানান, আগামী সোমবার তাঁদের ফের যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীটি।

এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার। তিনি বলেন, ‘‘একেবারেই অনভিপ্রেত ঘটনা। বিশদে খোঁজখবর নিচ্ছি। ওই রোগী যাতে দ্রুত দেখাতে পারেন সে জন্য অফিসার-কর্মীদের পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।’’

এই ঘটনার পরে হাসপাতালের রোগী সহায়তা বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রোগীরা সমস্যা পড়লে সরাসরি যাতে যোগাযোগ করতে পারেন সে জন্য একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া রয়েছে। কিন্তু, অধিকাংশ সময় নম্বরটি বেজে যায় বলে রোগীদের অনেকেরই অভিযোগ। যাঁর মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে সেই ডেপুটি সুপার বিজয় থাপা বলেন, ‘‘আমার মোবাইল বেজে গিয়েছে, আমি ধরিনি এমন হতেই পারে। অনেক সময়ে মিটিংয়ে থাকি। কখনও মোবাইল অফিসে রেখে ছুটতে হয় রোগীর কাছে। তবে অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে সুরাহার চেষ্টা করে থাকি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Medical College Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE