ভোগান্তি: শয্যা নেই। বাধ্য হয়ে মেঝেতেই শুয়ে থাকতে হচ্ছে রোগীদের। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
রোগীদের ভিড়ে থিকথিক করছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল। হাসপাতালের আউটডোরের লম্বা লাইন ঘর ছাড়িয়ে রোগী সহায়তা কেন্দ্র পেরিয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের নানা ওয়ার্ডে জায়গার অভাবে মেঝেতেই শুয়ে আছে একাধিক রোগী। আউটডোরেও চিকিৎকসকরা সময়মতো না আসায় সমস্যায় পড়েছেন রোগী সহ তাদের আত্মীয় পরিজনেরা। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন সোমবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে গিয়ে এমনই ছবি দেখা গেল। রোগীদের আত্মীয় পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে বেডের সংখ্যা কম থাকার ফলেই সমস্যা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ৩৬৫টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বর্তমানে ৪৫০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালে শিশু বিভাগ, সার্জিক্যাল, চোখ, নাক-কান-গলা, স্ত্রী রোগ, মেডিসিন সহ মোট ১০টি বিভাগে আউটডোর রয়েছে। প্রতিদিন অন্তত দু’হাজার রোগী আসেন চিকিৎসার জন্য। রোগীদের অভিযোগ, প্রতিটি বিভাগে একজন করে চিকিৎসক থাকার ফলে সমস্যা বেড়েছে। অনেকটা সময় রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘‘সকালে এসে দু’ঘণ্টা পার হতে চললেও এখনও চিকিৎসক দেখাতে পারলাম না।’’ হাসাপাতালের মেডিসিন বিভাগের আউটডোরে বেলা এগারোটার পরে কোনও চিকিৎসককেই দেখা যায়নি। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, জিজ্ঞেস করলেই হাসপাতালের কর্মীরা বলছেন, ‘‘ডাক্তারবাবু কলে গিয়েছেন।’’
হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘চিকিৎসার জন্য কেউ এলে আমরা তাঁদের ফিরিয়ে দিতে পারি না। অথচ, হাসপাতালে বেডের সংখ্যাও কম। এর জেরেই সমস্যা হচ্ছে।’’ হাসপাতালের আউটডোরে লম্বা লাইন ছিল এ দিন। বিশেষ করে স্ত্রীরোগ, শিশু বিভাগ, এবং সার্জিক্যাল বিভাগের সামনে ভিড় ছিল
সবথেকে বেশি। এছাড়াও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড যেমন, নতুন ভবনের পুরুষ মেডিসিন বিভাগে করিডরের মেঝেতে শুয়ে রয়েছেন রোগীরা। একই অবস্থা মহিলা সার্জিক্যাল বিভাগেও। সেখানেও ওয়ার্ডে রোগীদের থাকার জায়গা না থাকায় অনেকেই মেঝেতেই বাধ্য হয়ে শুয়ে আছেন। বর্ষার মরসুমে জলবাহিত রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে। এ ভাবে মেঝে, করিডরে শোয়ার ফলে রোগীদের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়ছে বলে জানান হাসপাতালের নার্সদের একাংশ।
রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বেডের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ালেই এই সমস্যা মিটে যাবে। বিষয়টা স্বাস্থ্য ভবনে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy