Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অধিকারের নথি পেতে লম্বা লাইন

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি’র পর উত্তরাধিকারী শংসাপত্রের জন্য আবেদন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৯
Share: Save:

কেউ ভিড় করছেন কাউন্সিলরের বাড়িতে। কেউ আবার পুরসভায় বা গ্রাম পঞ্চায়েতে। কেউ কেউ ছুটছেন আদালতেও। উত্তরাধিকারী শংসাপত্র সংগ্রহেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সবাই। কোচবিহারে ওই শংসাপত্র দেওয়ার কাজ চলে বছরভর। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শংসাপত্র সাধারণত অংশীদারদের নিজ নিজ নামে খতিয়ান বের করার জন্য প্রয়োজন হয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি’র পর ওই শংসাপত্রের জন্য আবেদন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ জানান, মাত্র দু’মাস আগেও সপ্তাহে খুব বেশি হলে পাঁচটা এমন শংসাপত্র দিতেন তিনি। এখন রোজ গড়ে ১৫ টি করে শংসাপত্র দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “আচমকাই ওই উত্তরাধিকারের শংসাপত্রের জন্য আবেদন বেশি করে পড়তে শুরু করেছে। পরে বুঝতে পারি, অনেকের ক্ষেত্রেই জমিজমা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে এই উদ্যোগ। এনআরসি ও সিএএ থেকেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ঢুকেছে।”

ওই আবেদন বেশি পড়ার কথা জানিয়েছেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহও। তিনি বলেন, “ওই আবেদনের সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে।”

অসমে নাগরিকপঞ্জির পরেই কোচবিহারে বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করে দেন। বহু বছর আগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোচবিহারের রেকর্ড রুম পুড়ে যাওয়ায় অনেকেই

কলকাতায় গিয়ে জমির কাগজপত্র বার করার চেষ্টা করেন। নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরে নথিপত্র সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মানুষ। আধার কার্ডের লাইনে ভিড় জমছে প্রতিদিন। এই অবস্থায় উত্তরাধিকারী শংসাপত্র নিতেও পুরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে হাজির হচ্ছেন বাসিন্দারা। অনেকেই আবার আদালতে গিয়ে এফিডেভিট করিয়ে নাম-পরিচয় ঠিক করে শংসাপত্রের জন্য আবেদন করছেন।

কোচবিহার আদালতের আইনজীবী শিবেন রায় জানান, প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি এফিডেভিট বা হলফনামা তৈরি হচ্ছে আদালতে। এগুলির অধিকাংশই নাম-পরিচয় ঠিকঠাক করাতে। তিনি বলেন, “উত্তরাধিকারী সূত্রে পাওয়া জমির খতিয়ান বের করার জন্য পুরসভার বা গ্রাম পঞ্চায়েতের শংসাপত্রের প্রয়োজন হয়। সে জন্যেই মানুষ সেই শংসাপত্রের জন্য আবেদন করেন। কোথাও নামের ভুল থাকলে তা আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে ঠিক করিয়ে নেন।”

তৃণমূলের একটি অংশ দাবি করেছে, বাবা-মায়ের জমিতে একসঙ্গে পরিবারের একাধিক মানুষ বসবাস করছেন— এমন বহুদিন ধরেই চলছে। নানা সরকারি সুযোগ-সুবিধের জন্য কখনও কখনও তাঁরা ওই আবেদনে শংসাপত্রে নিয়ে খতিয়ান বের করছিলেন। এনআরসি ও সিএএ’র পর থেকে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ঢুকে যাওয়ায় প্রত্যেকেই উত্তরাধিকারীর জমি নিজের নিজের নামে করে নিচ্ছেন।

চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল

বিধায়ক উদয়ন বলেন, “নথিপত্র, জমির কাগজ সব ঠিক না থাকলে বিপদ হতে পারে ভেবেই বাসিন্দারা এমন করছেন।”

বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “বছরভর ওই কাজ চলতে থাকে। তৃণমূল মিথ্যা প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Successor Certificate NRC Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE