শোকের ছায়া রয়েছে গোটা এলাকা জুড়েই। এলাকার বাজারহাট, দোকানপাটও প্রায় সবই বন্ধ। সন্ধে হলেই পুরুষশূন্য হয়ে পড়ছে গ্রাম। মৃত দুই ছাত্রকে দলঞ্চা নদীর ধারে যেখানে কফিনবন্দি করে কবর দেওয়া হয়েছে, সেখানে বাসিন্দারা পাহারা দিচ্ছেন। কারণ, রাতবিরেতে যে কেউ ওই দেহ বদলে দিতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
বৃহস্পতিবার দাড়িভিট স্কুল চত্বরে গুলিতে দু’জনের মৃত্যু ঘটে। ঘটনার দু’দিন পরেও স্কুলচত্বর খাঁ খাঁ করছে। রবিবারও দেখা যায় ক্লাস ঘরগুলির অনেক দরজা, জানলা খোলাই পড়ে রয়েছে। নিরাপত্তার বালাই নেই। ভয়ে দারোয়ানরা ঘটনার পর থেকে যাননি। নথিপত্র লন্ডভন্ড হয়ে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে বারান্দায়, মাঠের একাংশে। পুড়ে যাওয়া গাড়ি মাঠের একদিকে পড়ে। কবে থেকে স্কুল খুলবে তা অনিশ্চিত। জেলা প্রশাসনের তরফে স্কুল নিয়ে শিক্ষা দফতরে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানোর কাজ চলছে। তবে প্রশাসনের তরফে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া তিন দিনেও শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।
এলাকার কয়েক জন মহিলা জানালেন, রাতে এলাকায় পুরুষেরা থাকতেই চাইছেন না। এলাকা সূত্রে খবর, রাতেই হানা দিচ্ছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এলাকার আটজন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। মৃত রাজেশ সরকারের খুড়তুতো দাদা তাপস সরকার বলেন, ‘‘আমার ভাই মারা গেল। পুলিশ নিজেদের দোষ ঢাকতে এখন এলাকার যুবকদের গ্রেফতার করছে।’’ তবে তিনি আরও জানান, রাত জেগে এলাকায় কবর পাহারা দিচ্ছেন তাঁরা। এলাকা সূত্রের খবর, মৃতের দুই পরিবার থেকেই কয়েকজন সদস্য মিলেই রাত জাগছে।
রবিবার এলাকায় পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি, ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবাল গেলে মৃতের পরিবার এবং বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। এলাকায় এ দিন বিক্ষোভ মিছিলও করে বিজেপি। স্কুলের মাঠের একধারে একটি সভাও করে। এ দিন স্কুলের মাঠের একধারে বিজেপি সভা করে পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের রুখে দাঁড়াতে বলেন। তাতে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে আরও বেশি অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন অনেকে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy