Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঘট সাজিয়ে প্রিয়দার জন্যই প্রার্থনা

অষ্টমী ও নবমীর দিন ভিভিআইপিরা সহ কয়েকশো মানুষের সঙ্গে বসে পাতপেড়ে খিচুড়ি প্রসাদ খেতেন দাশমুন্সি দম্পতি! এককথায় দাশমুন্সি পরিবারের পুজোকে ঘিরে উত্সবের চেহারা নিত গোটা শ্রীকলোনি এলাকা।

গৌর আচার্য
কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২৯
Share: Save:

আলো আর আনন্দে এক সময় ভেসে যেত যে পুজো, এখন সেখানে কেবল ঘটপুজো হয়।

কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনি এলাকার ভিভিআইপি বাড়ি বলে পরিচিত দাশমুন্সি পরিবারের দুর্গাপুজোই ছিল উত্তর দিনাজপুরের মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রে। আসতেন কলকাতা ও দিল্লির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা মন্ত্রীরা। প্রতি বছর পুজোর চার দিন দাশমুন্সি পরিবারের বাড়ির সামনে লালবাতির গাড়ির ভিড় ও নিরাপত্তারক্ষীদের তত্পরতা বাসিন্দাদের কাছে চেনা ছবি হয়ে উঠেছিল। আর যাঁকে ঘিরে সেই ভিভিআইপি পুজোর বৃত্ত সম্পূর্ণ হত, রায়গঞ্জের তত্কালীন কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সিকে নিয়ে যখন ঠাকুরদালানের সামনে ঢাকের বোলে ধুনুচি নিয়ে নাচতেন, তখন সবাই দাঁড়িয়ে থেকে তালে তালে হাততালি দিতেন।

অষ্টমী ও নবমীর দিন ভিভিআইপিরা সহ কয়েকশো মানুষের সঙ্গে বসে পাতপেড়ে খিচুড়ি প্রসাদ খেতেন দাশমুন্সি দম্পতি! এককথায় দাশমুন্সি পরিবারের পুজোকে ঘিরে উত্সবের চেহারা নিত গোটা শ্রীকলোনি এলাকা।

সেই পুজোর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন দাশমুন্সি পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কালিয়াগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কালিয়াগঞ্জ শহর কংগ্রেস সভাপতি অরুণ দে সরকার। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা চাই প্রিয়দা সুস্থ হয়ে উঠুক। ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর অষ্টমীর দিন প্রিয়দার ঠাকুরদালানে ঘটপুজো করে এই প্রার্থনাই করে চলেছি আমরা।’’

২০০৮ সালে লক্ষ্মীপুজোর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রিয়বাবু। সেই থেকে তিনি দিল্লিতে চিকিত্সাধীন। ২০০৯ সালে দীপাদেবী রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর দীপাদেবীর উদ্যোগেই ২০১৩ সাল পর্যন্ত পুরনো কাঠামোয় প্রতিমা তৈরি করে দুর্গাপুজো হয়েছে। তাতে জৌলুস কম ছিল, কিন্তু পুজো হত। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে আসা প্রায় বন্ধই করে দেন দীপা। ওই বছর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় দাশমুন্সির পরিবারের দুর্গাপুজো। প্রিয়বাবুর এক দাদা ও তিন ভাই আগাগোড়াই কলকাতায় থাকেন। পুজোর দিনগুলিতেই কালিয়াগঞ্জে আসতেন তাঁরা। সে সবও একরকম বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

অরুণবাবু জানিয়েছেন, ২০০৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চমীর দিন স্ত্রী দীপা ও ছেলে মিছিলকে নিয়ে কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে চলে আসতেন প্রিয়বাবু। পঞ্চমী ও ষষ্ঠীর রাত জেগে দিল্লি থেকে আনা নানা সামগ্রী দিয়ে নিজের হাতে ঠাকুরদালান সাজাতেন প্রিয়বাবু। দীপা এখন দিল্লিতে।

কবে আবার শ্রীকলোনিতে পুজোর সেই দিন ফিরবে, আবার কবে প্রিয়দার পরিবারের পুজোকে ঘিরে উত্সবে মাতবেন তাঁরা, তারই অপেক্ষা করছেন উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Priya Ranjan Dasmunsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE