Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ওই মর্মান্তিক দৃশ্যের কথা ভেবে শিউরে উঠছে পাড়াপড়শি

রবিবার রাত ২টো। চিৎকার শুনে ছুটে যান প্রতিবেশীরা। দেখেন, গোবিন্দ ও বিকাশ মণ্ডলের বাড়ির দুই ঘরে আগুন লেগেছে। কিন্তু দু’টো ঘরই বাইরে থেকে বন্ধ। ভিতর থেকে ভেসে আসছে মিলিত আর্তনাদ। অগত্যা দরজা ভাঙেন তাঁরা। দেখা যায়, আটজনের শরীর পুড়ে যাচ্ছে।

হাহাকার: মালদহের মানিকচকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

হাহাকার: মালদহের মানিকচকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানিকচক শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৫
Share: Save:

ঘরের মধ্যে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সেই আগুনের ভিতরে যন্ত্রণায় ছটফট করছে কয়েকজন শিশু-কিশোর, আর্তনাদ করছেন তাদের বাবা-মায়েরা। অসহায় পড়শিরা ওই আগুনের হলকায় ঢুকতেও পারছিলেন না ঘরগুলোয়। ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও ওই মর্মান্তিক দৃশ্যের কথা ভেবে শিউরে উঠছেন ডোমহাট গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ।

রবিবার রাত ২টো। চিৎকার শুনে ছুটে যান প্রতিবেশীরা। দেখেন, গোবিন্দ ও বিকাশ মণ্ডলের বাড়ির দুই ঘরে আগুন লেগেছে। কিন্তু দু’টো ঘরই বাইরে থেকে বন্ধ। ভিতর থেকে ভেসে আসছে মিলিত আর্তনাদ। অগত্যা দরজা ভাঙেন তাঁরা। দেখা যায়, আটজনের শরীর পুড়ে যাচ্ছে। আগুন নিভিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চারজনকে বাঁচানো যায়নি। ঘটনায় শোকস্তব্ধ পুরো গ্রাম। ঘটনার জেরে পরিস্থিতি এমনই যে, গ্রামের অনেক বাড়িতেই এ দিন হাঁড়ি চড়েনি।

আগুন লাগানোর ঘটনায় এক ভাই মাখনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় সকলেই বিস্মিত। বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, খুনি বা দুষ্কৃতীদেরও কেউ এই ভাবে কেউ শাস্তি দেয় না। কী ভাবে সে একাজ করতে পারল তাতেই বিস্মিত গোটা গ্রাম। ওই রাতে গোবিন্দ ও বিকাশের বাড়িতে আগুন লেগেছে। গোবিন্দ তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে এবং বিকাশ, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পালানোর সুযোগ পাননি কেউই। তার উপর ঘর বাইরে থেকে বন্ধ ছিল বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ভোলানাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘আচমকা রাতে ‘আগুন আগুন’ চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে বেরোই। দেখি, ওদের ঘর দাউদাউ করে জ্বলছে। গ্রামবাসী আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকায় প্রথমে নেভানো হয়। পরে দরজা ভেঙে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।” বিকাশের এক ভাই লক্ষ্মণের স্ত্রী রূপালি বলেন, “আমার স্বামী বাইরে রয়েছেন। রাতে ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলাম। আচমকা চিৎকার শুনতে পাই। ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি। আমার ঘরও বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া ছিল।’’

এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে মৃত বিকাশের স্ত্রী ববিতা, দুই ছেলে বিশাল, অলোক, মৃত গোবিন্দবাবুর স্ত্রী রাখি দেবী। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, চারজনেরই শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Fire Shock
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE