Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাঁদরের অত্যাচারে নাকাল কোচবিহার

প্রিয় পোষ্য ব্ল্যাকি-কে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিল দে। সুভাষপল্লি এলাকার বাড়ি থেকে বেরোতেই আচমকা গাছ থেকে নেমে আসা দুই বাঁদর ব্ল্যাকির সামনে দাঁড়িয়ে দাঁত খিচিয়ে হইচই জুড়ে দেয়। বিশ্বসিংহ রোড এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণা সাহা আবার সাধ করে ছাদের এককোণে তিন তিনটে কুমড়ো ফলিয়েছিলেন।

এ ভাবেই ঘরের চালে হানা দিচ্ছে বাঁদরেরা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

এ ভাবেই ঘরের চালে হানা দিচ্ছে বাঁদরেরা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৫
Share: Save:

প্রিয় পোষ্য ব্ল্যাকি-কে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিল দে। সুভাষপল্লি এলাকার বাড়ি থেকে বেরোতেই আচমকা গাছ থেকে নেমে আসা দুই বাঁদর ব্ল্যাকির সামনে দাঁড়িয়ে দাঁত খিচিয়ে হইচই জুড়ে দেয়।

বিশ্বসিংহ রোড এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণা সাহা আবার সাধ করে ছাদের এককোণে তিন তিনটে কুমড়ো ফলিয়েছিলেন। রবিবার সকালে হাজির হয়ে চোখের পলকে তিনটিই সাবাড় করে ওই বাঁদরেরা।

তবে কেবল কুমড়োই নয়, কখনও কারও বাড়ির কাঁঠাল, কারও গাছের পেঁপে দিয়ে চলছে তাদের ভোজন। ঢেঁকুর তোলার কায়দায় বাড়ির লোকদের দেখিয়ে মুখ উঁচিয়ে অঙ্গভঙ্গিও করছে তারা। মেজাজ বিগড়োলে গৃহস্থের জামাকাপড় থেকে ঘরের খাবারের প্যাকেটও তুলে নিয়ে পালাচ্ছে। এ ভাবেই প্রায় একমাস ধরে কোচবিহার শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একদল বাঁদর। তাদের অত্যাচারে নাজেহাল বাসিন্দারা। তিতিবিরক্ত বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এপ্রিলে কোচবিহারের নতুন বাজার, ভেনাস স্কোয়ার ও লাগোয়া এলাকায় একটি বাঁদর টানা কয়েকদিন তাণ্ডব চালায়। জখম হন অন্তত ৯ জন। এ বারের দফায় এখনও কারও জখম হওয়ার ঘটনা না হলেও আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কখনও একসঙ্গে দুই-তিনটি, কখনও একাই একটি বাঁদর শহরজুড়ে দাপিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাড়িতে তো বটেই একটি মহিলা আবাসনেও একদিন ঢুকে পড়ে গোলমাল বাধায় ওই দলের একটি। নিখিলবাবুর অভিজ্ঞতা, “পোষা কুকুর ব্ল্যাকিকে দেখলেই দাঁত খিচিয়ে তেড়ে আসার মত করে তাতিয়ে দিচ্ছে। বন দফতরে জানিয়ে লাভ হয়নি।”

বন দফতর জানিয়েছে, কিছুদিন আগে শহরে চার থেকে পাঁচটি বাঁদর ঢুকে পড়েছে। সবই জঙ্গলের বলে মনে করা হচ্ছে। কাঁঠাল, কলার টোপ দিয়ে খাঁচা বসিয়ে সেগুলিকে ধরার ভাবনা হচ্ছে। কোচবিহারের রেঞ্জ অফিসার সুরঞ্জন সরকার জানান, কিছুদিন আগে শহরের নতুন বাজার এলাকা থেকে একটি বাঁদর ধরা হয়। এ বারও বাঁদরগুলি ধরার চেষ্টা হচ্ছে। পরিবেশপ্রেমীদের অবশ্য অভিযোগ, জঙ্গলে খাবারের অভাবেই লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বন্যেরা। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “এ সব জঙ্গলে খাবারের অভাবের জের। রাজাভাতখাওয়া বা দমনপুর থেকে বাঁদরগুলি এসেছে এমন সম্ভাবনা বেশি।”

রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন অবশ্য বলেন, “জঙ্গলে খাবারের কোনও সমস্যা নেই। দফতরের আধিকারিকদের বাঁদরের উপদ্রব ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Monkey Cooch behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE