ছবি: সংগৃহীত
আজ ভালবাসার দিন। আজ ইলিশেরও দিন।
কথাটা যে নেহাত কথার কথা নয়, তা টের পাওয়া যাবে উত্তরের জেলা শহর আলিপুরদুয়ারে পা রাখলেই।
ভালবাসার দিনে প্রিয়জনকে কী উপহার দিতে চান? প্রশ্ন করলে কিছুটা প্রত্যাশিত ভাবেই অনেকে উত্তর দেবেন, ‘‘কেন, গোলাপ!’’ কিন্তু এ বারে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র এক দিন আগে সেই গোলাপ কি পদ্মার রুপোলি শস্যের চাপে কিঞ্চিৎ পিছু হটল? প্রেম-দিবসে প্রিয়জনকে খুশি করতে অন্য সব কাজ ফেলে ইলিশের খোঁজে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থলে হাতে অনেকেই ছুটলেন সরকারি বিপণি, সুফল বাংলাতে। আর ইলিশ হাতে মিলতেই মুখে ফুটে উঠল তৃপ্তির হাসি।
আলিপুরদুয়ার শহরের সুফল বাংলার স্টলে শেষ পদ্মার ইলিশ এসেছিল গত বছর অগস্টে। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেই ইলিশ বিক্রির কথা বিপণির তরফে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মাত্র পনেরোটি ইলিশ আসায় তড়িঘড়ি ছুটে গিয়েও সে বার অনেকের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। আলিপুরদুয়ার সুফল বাংলা স্টলের কো-অর্ডিনেটর আমজাদ আলি জানাচ্ছেন, সেই সময় যে ক্রেতাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই ইলিশের খোঁজ করতেন। তাঁরাও ক্রেতাদের বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলতেন। কিন্তু বারবার তারিখের পর তারিখে অনেকেই অসন্তুষ্ট হচ্ছিলেন। দিন কয়েক আগে ইলিশ আসার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর তখন থেকেই ক্রেতাদের অনেকে অন্তত ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে যাতে ইলিশ আসে তার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভালবাসার জয়ে মান রাখল ইলিশও।
সুফল বাংলা স্টল সূত্রের খবর, গত বারের মতো এ বারেও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে এই ইলিশ উত্তরবঙ্গে এসেছে। জলপাইগুড়ির এক মাছের আরতদারের মাধ্যমে তা আলিপুরদুয়ারের সুফল বাংলায় পৌঁছয়। এ বারেও ইলিশের সংখ্যা ছিল সেই পনেরোটিই। ইলিশ পৌঁছনোর পরে এ দিনও সেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই বিষয়টি সকলকে জানানো হয়। কিন্তু তার আগেই মুখে মুখে বার্তাটা রটে যেতেই ক্রেতাদের অনেকেই সকাল থেকেই স্টলের সামনে আনাগোনা শুরু করে দেন।
অরবিন্দনগরের বাসিন্দা সৌম্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্ত্রী ইলিশ খুব পছন্দ করে। বুধবার রাতেই খবর পাই, সুফল বাংলার স্টলে বাংলাদেশের ইলিশ বিক্রি হবে। দেরি না করে সকাল সকাল স্টলে পৌঁছে যাই। এবং শুরুতেই একজোড়া ইলিশ কিনে নেই। এক দিন আগেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র এমন একটা উপহার পেয়ে স্ত্রী যে কতটা খুশি হয়েছে বলে বোঝাতে পারব না।’’
সূত্রের খবর, এ দিন সুফল বাংলা স্টলে বিক্রি হওয়া ইলিশগুলির ওজন ছিল ন’শো গ্রাম থেকে এক কেজি দু’শো গ্রামের মধ্যে। কেজি প্রতি দাম ছিল ১৫৫০টাকা। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইলিশ শেষ হয়ে যায়। ফলে এ বারেও একটুর জন্য হাত ফস্কে যায় অনেকের। যাঁদের এক জন রাজু দাস বলছেন, ‘‘গিন্নিকে খুশি করতে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র উপহার হিসেবে একটা ইলিশ কিনব ভেবেছিলাম। কিন্তু সুফল বাংলায় পৌঁছনোর আগেই সব শেষ হয়ে যায়। ফলে গোলাপ দিয়েই কাজ চালাতে হবে। কিন্তু ইলিশের বিকল্প কি কখনও গোলাপ হতে পারে, বলুন তো?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy