Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ঈদে খুশির খোঁজ

স্মার্টফোন, আতরের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে উটের মাংসও

ঈদের আগের দিন বাজারে চাহিদা উট থেকে ফোর জি স্মার্টফোনের। সোমবার উত্তরবঙ্গ জুড়ে ঈদের প্রস্তুতি চলেছে উৎসবের মেজাজে। কোথাও পশুর বাজারে নিলামের তুমুল হাঁকডাক, কোথাও বা আতর-সুর্মার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি নেওয়ার হিড়িক।

খুঁটিয়ে দেখে...। ঈদের জন্য টুপি কিনতে ব্যস্ত এক খুদে। জলপাইগুড়িতে। ছবি:সন্দীপ পাল।

খুঁটিয়ে দেখে...। ঈদের জন্য টুপি কিনতে ব্যস্ত এক খুদে। জলপাইগুড়িতে। ছবি:সন্দীপ পাল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫০
Share: Save:

ঈদের আগের দিন বাজারে চাহিদা উট থেকে ফোর জি স্মার্টফোনের। সোমবার উত্তরবঙ্গ জুড়ে ঈদের প্রস্তুতি চলেছে উৎসবের মেজাজে। কোথাও পশুর বাজারে নিলামের তুমুল হাঁকডাক, কোথাও বা আতর-সুর্মার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি নেওয়ার হিড়িক।

চাঁচলে এ দিন যত উট বিকিয়েছে সবই রাজস্থানের। একেকটি উটের দাম ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এক একটি উটে মাংস মেলে গড়পরতা এক কুইন্টাল। দামের কারণে কয়েকজন মিলে একটি উট কেনেন। কলকাতার বাজার থেকে কেউ কেউ দুম্বাও কিনে এনেছেন। ৩০ থেকে ৩৫ কেজি ওজনের দুম্বার দাম পড়েছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। উট-দুম্বার নাগাল যাঁরা পাননি, তাঁরা নিলামে কিনেছেন খাসি। তুলসিহাটা হাটে ২৭ কেজি খাসি বিক্রি হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকায়।

মালবাজারে ঈদের বাজার মেতেছে স্মার্টফোনের কাড়াকাড়িতে। যে দোকান থেকে দিনে ৫ থেকে ৭টি স্মার্টফোন বিক্রি হয় সেখানেই গত দু’দিনে গড়ে ১৫ থেকে ২০টি পর্যন্ত স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। ক্রান্তির বাসিন্দা স্যানুয়েল করিম যেমন বলেন, ‘‘উৎসবে নতুন গ্যাজেট হাতে থাকার মজাই আলাদা।’’ হলদিবাড়ির লুৎফর রহমান বলেন, “ঈদে মাংসের দাম অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে।”

ফি বছরের মতো এ বারেও কোরবানির জন্য কোচবিহার সদর মহকুমার সুটকাবাড়িতে বড় বাজার বসেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, কোচবিহার সদর মহকুমা তো বটেই, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা থেকে লাগোয়া ডুয়ার্স ও অসমের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে উট কিনতে সেখানে আসছেন অনেকে। একটি উটের সর্বাধিক দাম উঠছে এক লক্ষ টাকার বেশি। বিক্রেতাদের বক্তব্য, যোগান কম বলে দাম বেড়েছে। প্রভাব ফেলছে পরিবহণ খরচের মূল্যবৃদ্ধিও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিহার ও কোচবিহারের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের যৌথ উদ্যোগে ওই কারবার চলে। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, গত বছরের বড় জোর ৫০টির মতো উট বিক্রি হয়েছিল। এ বার প্রাথমিক হিসাবে জেলায় অন্তত ১০০টি উট এসেছে। সুটকাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক কর্মী নূরজামাল মিঁয়া জানান, মানত পূরণের জন্য উট কোরবানিতে আগ্রহ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, অনেকেই কোরবানির পরে উটের মাংসের এক ভাগ এলাকার পাড়াপ্রতিবেশী আত্মীয়দের মধ্যে বিলি করেন। বাকি দু’ভাগ মাংস অন্য আত্মীয় পরিচিতদের মধ্যে বিলি করা হয়। উটের মাংস খুব সুস্বাদু।”

বিক্ষিপ্ত ভাবে ঈদের দিন কিছু এলাকায় উটের মাংস বিক্রি হয়। সেখানে অবশ্য ২৫ হাজার-৩০ হাজার টাকায় কেনা উট বিক্রির প্রবণতাই বেশি। একেকটি উট থেকে ৬০-১০০ কেজি পর্যন্ত মাংস পাওয়া যায়। খোলা বাজারে ন্যূনতম দাম পড়ে ৩০০-৫০০ টাকা প্রতিকেজি। মাথাভাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদ জানিয়েছেন, উটের মাংস খোলা বাজারে সেভাবে পাওয়া যায় না। দামও খানিকটা বেশি। পবিত্র ইদের কথা মাথায় রেখে দুটি ব্যাপারে নজর দিলে ভাল হয়। রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহারে উট আসে মালদহ থেকে। তবে রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজারে এ দিন খাসির মাংস কেজি প্রতি গড়ে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এক একটি গোটা খাসি ওজনের ভিত্তিতে দুই থেকে আট হাজারেয় বিক্রি হয়েছে।

আলিপুরদুয়ারে পৃথকভাবে ঈদের বাজার বসে না। তবে সারা শহর জুড়েই ছিল উৎসবের মেজাজ। চৌপথি এলাকার মসজিদে আজ, মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে নমাজ শুরু হবে। কুরবানি, ভোজেরর আয়োজন হয়েছে আঠেরো নম্বর ওয়ার্ডেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eid festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE