মুখবদল: বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দলের সদর দফতরের সামনে বিপ্লব মিত্র ও জেলা পরিষদের দশ সদস্য। সোমবার নয়াদিল্লিতে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলের সঙ্গে। টানা দু’দশক পর সোমবার দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলেন বিপ্লব মিত্র। এ দিন তিনি যখন দলবল নিয়ে দিল্লিতে গেরুয়া শিবিরের পতাকা ধরছেন তখন অদ্ভুত ভাবে চুপচাপ তাঁর জেলা। বিপ্লবের মতো হোভিওয়েট ও দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা নেতার দলবদল নিয়ে তেমন উৎসাহ লক্ষ করা যায়নি জেলা সদর বালুরঘাটে। এমনকি, তাঁর নিজের শহর গঙ্গারামপুরেও।
তবে প্রতিক্রিয়ায় অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বিপ্লবের বিজেপিতে যাওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতির উপর। তাঁরা চিন্তিত, এতদিনের চেনা দাপুটে তৃণমূল নেতার দল ‘বদলে’ কেমন হবেন, তা নিয়ে। তাঁদের অনেকেরই আশঙ্কা, বিজেপি নেতা হয়ে বিপ্লব জেলায় ফিরলেই ফের শুরু হবে দলবদলের পালা। সেই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের প্রবল সম্ভাবনায় আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছেন বালুরঘাটের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। শহরের শিক্ষক থেকে সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের একাংশের বক্তব্য, বিপ্লব দল বদলে বিজেপিতে যেতেই পারেন। কিন্তু তার জেরে শহরে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হোক, তা তাঁরা মোটেই চান না। তাঁদের বক্তব্য, দল বদল করলেও বিপ্লবের দোর্দণ্ডপ্রতাপ ভাবমূর্তি রাতারাতি বদলে যাবে, এমন ভাবাটা বোকামি। ফলে জেলায় দলবদলকে ঘিরে ডাকাবুকো এই নেতার সঙ্গে শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের সংঘাত বাধবেই। যার জের গড়াতে পারে সংঘর্ষে। এ কথা মাথায় রেখে শহরের শিক্ষিত বাসিন্দারা বিপ্লবের বিজেপি-যোগদানে চমকিত নন। বরং তাঁরা চিন্তিত, শহরে শান্তির পরিবেশ নিয়ে।
পাশাপাশি, বরাবর গঙ্গারামপুর-কেন্দ্রিক তৃণমূলের রাজনীতি গড়ে তুলে বিপ্লবের বিজেপিতে যোগদানে জেলার গেরুয়া শিবিরের একাংশের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গিয়েছে। এ দিন গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুর জুড়েও ছিল থমথমে পরিবেশ। অনেকের কাছে আবার বিপ্লবের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে খটকাও ছিল। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে সারাদিন কাটিয়ে বিকেলে টিভিতে বিপ্লব ও তাঁর অনুগামীদের বিজেপিতে যোগদানের ছবি দেখে অনেকেই চমকেছেন। সাধারণ খেটে খাওয়া লোকজনের অবশ্য এসবে কোনও হেলদোল ছিল না। গঙ্গারামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সুবোধ রায়, বিকাশ বিশ্বাসদের মতো হকারদের বক্তব্য, কোন নেতা কোন দলে গেলেন তা খবর রেখে তাঁদের কোনও লাভ নেই। কারণ এতে তাঁদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না।
জেলার দুই শহরের একাংশ তৃণমূল কর্মীরাও প্রচণ্ড আশঙ্কার মধ্যেই রয়েছেন। অচিরেই বিপ্লব এবং অর্পিতার লড়াইয়ের সম্ভাবনায় অশান্তির ছায়া দেখছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy