আশাবাদী: ছেলেকে কোলে বাসন্তীদেবী। নিজস্ব চিত্র
ছ’বছরের একমাত্র সন্তান অসুখে ভুগে পঙ্গু। স্থানীয় স্তরের চিকিৎসায় আর কিছু হবে না বলে শুনতে হয়েছে। উচ্চ চিকিৎসার সামর্থও ছিল না দরিদ্র পরিবারের। এই অবস্থায় ঘরের কাছেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন জেনে শিশুকে কোলে নিয়েই ছুটেছিলেন অসহায় মা। তাতেই কাজ হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতার বাঙ্গুরে উচ্চ চিকিৎসার সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই শিশুর।
বুধবার এমন ঘটনাই ঘটেছে ডুয়ার্সের টিলাবাড়িতে। মঙ্গলবার থেকেই টিলাবাড়িতে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন থেকেই কার্যত অসুস্থ শিশুকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাবার চেষ্টা শুরু করে দেন বড়দিঘি চা বাগানের গুদাম লাইনের বাসিন্দা বাসন্তী বড়ুয়া। সেদিন অবশ্য তিনি সফল হননি। বুধবার ফের টিলাবাড়ি পৌঁছে যান। কিন্তু তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী চালসা লাগোয়া টিয়াবনে পৌঁছে গিয়েছেন। ফের বিকেলে আসেন বাসন্তীদেবী। তখন মুখ্যমন্ত্রী গরুমারার জঙ্গলের পথে হাঁটছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ফিরতি পথে তাঁকে সামনে দেখেই ছেলেকে কোলে নিয়েই ‘দিদি’ ডাক দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর নিরাপত্তাকর্মীরা এরপর ওই শিশুর অসুস্থতার বিষয়টি জেনে নেন। বাসন্তীদেবীর মোবাইল নম্বরও নিয়ে নেন তাঁরা। কাজ হয় আধ ঘণ্টাতেই। বাড়ি পৌঁছতেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে আধিকারিকের ফোন পান বাসন্তীদেবী। শিশুর বিষয়ে বিস্তারিত জেনে কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে এরপর চিকিৎসার কথা সরকারি স্তর থেকে জানানো হয়। বলা হয়, কলকাতা যাবার ব্যবস্থা নিয়েও ভাবতে হবে না। শুধু কবে যাবেন তা জানাতে বলা হয় পরিবারটিকে।
বাসন্তীদেবীর ছ’বছরের ছেলে দিলসান সুস্থ স্বাভাবিকই ছিল। দু’বছর বয়সে তার প্রচণ্ড জর আসে। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় তাকে। ছ’দিন টানা কোমায় থেকে প্রাণ বাঁচে দিলসানের। কিন্তু প্রাণ বাঁচলেও স্নায়ুর সমস্যায় পঙ্গু হয়ে পড়ে সে। বাসন্তীদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। স্বামী দিবস বড়ুয়া বাগানে কাজ করতেন। কিন্তু ছেলের দেখভালের জন্যে সেখানেও ছেদ পরেছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য মেলায় এবার সব কিছু ঠিক হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। বাসন্তীদেবী বলেন, “একবার মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাঁড়াতে পারলে যে আমাদের সুরাহা হবেই তা জানতাম। সেটাই হয়েছে। এ বারে আমরা আশার আলো দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy