এলাকার অপরাধীদের যেমন তালিকা থাকে পুলিশের কাছে, তেমনই এ বার শিলিগুড়ি পুলিশের প্রতিটি থানায় জমি মাফিয়া এবং দালাল চক্রের বিস্তারিত তথ্য-সহ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে কমিশনারেটে প্রতিটি থানার আইসি, ওসি-সহ বিভিন্ন শাখার অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেছেন পুলিশ কমিশনার। সেখানে দ্রুত ওই তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। নাম, বাড়ির ঠিকানা, টেলিফোন নম্বরের পাশাপাশি কোনও রাজনৈতিক দলের ছাতার তলায় থাকলে তাও রাখতে বলা হয়েছে তালিকায়। সেই সঙ্গে কারও বিরুদ্ধে পুরনো কোনও মামলা, অভিযোগ থাকলে তা তালিকায় উল্লেখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে অফিসারদেরও সতর্ক করেছেন পুলিশ কমিশনার। তিনি জানান, কোথাও কোনও জমির সংক্রান্ত মামলা বা গোলমালে কোনও পুলিশ অফিসারের নাম জড়ালে প্রয়োজনে অভিযুক্ত অফিসারকে শোকজ, লাইনে ক্লোজ বা সাসপেন্ড পর্যন্ত করা হতে পারে। কয়েকজন পুলিশ অফিসারের কাজকর্মের উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে। জমি নিয়ে কোনও বেআইনি কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’’
গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জমি মাফিয়া, দালাল চক্রের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরন্দ্রেরও এর পরে আলাদা করে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন। ভক্তিনগর, প্রধাননগর এবং এনজেপি থানা এলাকায় বাড়তি নজরদারির কথা বলা হয়। বিশেষ করে, ইস্টার্ন বাইপাস, ফুলবাড়ি এবং চম্পাসারি-মিলনমোড়ে একাধিক অভিযোগ থাকায় কারা এ সব কাজে যুক্ত তাদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
কয়েকজন অফিসার জানান, জমির দালালদের একটি অংশ ভুয়ো নথি বানিয়ে জমি দখল করে, তা বেচে দেয়। অনেক সময় একই জমি একাধিক ব্যক্তিকে বিক্রি করে দিয়ে পরে সমঝোতা করে টাকা নেয়। আরেক দল, নদীর চর এলাকা বা খাস জমি দখল করে প্লট করে বিক্রির করে থাকে। অনেক সময় ভূমি রাজস্ব দফতরের কিছু অসাধু কর্মীদের যোগসাজশে নথিপত্রও তৈরি হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েকমাস আগে চম্পাসারির একটি সরকারি জমি দখল করা হয়। শাসক দলের তিনজন স্থানীয় নেতার নাম তাতে জড়ায়। পরে জেলেশাসকের নির্দেশে জমির দখল নেয় প্রশাসন। তেমনই, চম্পসারির ৫২ কাঠা জমি দখলের অভিযোগও এসেছে। এ বার এদের সবার নাম তালিকায় তুলবে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy