লগিন দাস
ফেরার তৃণমূল নেতা লগিন দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে বালুরঘাটের পতিরাম এলাকা থেকে স্থানীয় ভাটপাড়া পঞ্চায়েতের বিদায়ী তৃণমূল প্রধান লগিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। নিষিদ্ধ মাদক পাচারের কারবারের দুটি মামলায় অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি লগিন গত এক মাস ধরে ফেরার ছিলেন। পুরনো একটি বোমা বিস্ফোরণের মামলার তদন্তে জিজ্ঞসাবাদের জন্য পুলিশ গত বুধবার লগিনের মাস্টারপাড়ার বাড়িতে নোটিস ঝুলিয়ে দেয়। লগিনের সঙ্গে থাকা তাঁর গাড়ির চালক এবং এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে রাতেই গঙ্গারামপুর থানায় নিয়ে যায়।
বুধবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের (থার্ড কোর্ট) বিচারক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় ধৃতকে ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতের বিরুদ্ধে মাদকের ব্যবসা, খুনের চেষ্টা, বোমা বিস্ফোরণ, বেআইনি অস্ত্র ব্যবহার-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা রয়েছে। বেআইনিভাবে জমি দখলের মামলাতেও জড়িত লগিন।’’ ধৃত লগিনের পক্ষের আইনজীবী শতদ্রু সরকার দাবি করেন, ‘‘আইন মেনেই সম্পত্তি কিনেছেন লগিনবাবু।’’
গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়েও হেরে যান লগিন হেরে যান। যদিও গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূল জিতে নেয়। এর পরে মাদকের মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘লগিন অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে আইন ব্যবস্থা নেবে।’’ তৃণমূলের বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘লগিন ঠিকাদারি করতেন বলে জানি। মাদক, জমি দখলের মতো অভিযোগের মামলায় অভিযুক্ত বলে জানা ছিল না। লগিনের বিরুদ্ধে দলের তরফে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
এক দশকের বেশি সময় ধরে বালুরঘাটে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ছিলেন লগিন। জেলা কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন লগিন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও কম ছিল না। বালুরঘাটে রাতারাতি একের পর এক জমি ও বাড়ির মালিক হয়ে ওঠেন বলে পুলিশ তদন্তে জেনেছে। বালুরঘাট পুরসভার ভবনে মোটরবাইকের শোরুম, শহরে বিলিতি মদ বিক্রির বড় দোকান রয়েছে তাঁর। পুরসভার যে কোনও নির্মাণের ঠিকাদারিতেও অগ্রাধিকার ছিল তাঁর। ২০০১ সাল থেকে খুন থেকে শুরু করে একাধিক অভিযোগে ৯টি মামলা ঝুলছে। কেন পুলিশ পদক্ষেপ করেনি? তদন্তকারী অফিসাররা জানান, যখনই অভিযোগ মিলেছে, অভিযুক্তকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ দিকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু সরকারের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন বালুরঘাট, হিলি, তপন, বুনিয়াদপুর, কুশমণ্ডি এবং হরিরামপুরে রাস্তা অবরোধ করে দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। ফলে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। শেষে ২০ জন বিজেপি সমর্থককে আটক করে অবরোধ তোলে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy