শিলিগুড়ি
শনিবার লকডাউনের দিন, স্কুটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক মাঝবয়সী ব্যক্তি। পানিট্যাঙ্কি ট্র্যাফিক গার্ডের সামনে তাঁকে আটকালেন পুলিশকর্মীরা। মিলন মোড় থেকে আসা ওই ব্যক্তিকে তাঁর গন্তব্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানালেন যে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন। নিশ্চিত হতে ক্লিনিকের নম্বর নিয়ে ফোন করল পুলিশ, ওই ব্যক্তি ঠিক বলেছেন জানার পরে তাঁকে ছাড়া হল। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদের ঘটনা। রাজ্যের নির্দেশে লকডাউনে এমনই কড়াকড়ি চোখে পড়েছে শিলিগুড়ির শহরে।
এ দিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালায় পুলিশ। শহরের সবকটি থানায় সকাল থেকে নাকা তল্লাশি চলেছে। সেবক রোডে পায়েল সিনেমা হলের মোড়ে দস্তানা এবং স্যানিটাইজ়ার না থাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় ডেলিভারি বয়দের। হাসমিচক লাগোয়া গলির ভিতর ভিড় জমছে কিনা তা দেখার জন্য ওই চত্বরে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালায় পুলিশ। ঘোঘোমালি, আশিঘর কলোনি, ঝংকার মোড়, পানিঘাটা, গেটবাজার, মাটিগাড়া, খালপাড়া এবং এনজেপি এলাকা থেকে গ্রেফতারের সংখ্যা ১০০ ছাড়ায়। এদের সকলেই বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বেরিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ।
এ দিন শহরে যানবাহন বন্ধ থাকায় সমস্যা পড়েন ট্রেনযাত্রীরা। শনিবার সকালে পদাতিকে এসে পৌঁছন অন্তত ১০০ জন। অনেক খুঁজে কেউ টোটো, কেউ রিকশা জোগাড় করে গন্তব্যে পৌঁছন। টুরিস্ট ট্যাক্সি, সিটি অটো,অটো কিছুই চলেনি। বাগডোগরা বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন সেখানে বিমান পরিষেবা বন্ধ ছিল। আগামী ২৯ জুলাইও পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জরুরি পরিষেবা অধীনে থাকলেও এ দিন শহরে দুধ বিলি ধাক্কা খেয়েছে। অনেক মুদি দোকানেই দুধ বিক্রি করেন দোকানিরা। এ দিন নির্দেশ মতো সবকিছু বন্ধ থাকায়, দুধ বিক্রি নেমে এসেছিল তলানিতে। বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায় মুহুরি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে নিয়ে আসছি ব্যবসায়ীদের। পরবর্তী পূর্ণ লকডাউনে যাতে এরকম না হয় সেটা একটু অন্তত খেয়াল রাখতে হবে।’’
চলতি সপ্তাহে রাজ্যজুড়ে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে যে রকম কড়াকড়ি শিলিগুড়ি শহরজুড়ে দেখা গিয়েছে। শিলিগুড়িতে আলাদা করে লকডাউন চললেও অন্যদিন কেন সেরকম কড়াকড়ি হচ্ছে না সেই দাবি তুলেছেন তাঁরা। শুক্রবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুরনো ভিড় দেখা গিয়েছে, রবিবারও সেই ভিড় হলে এত কড়াকড়ি করে কী হবে সেই প্রশ্ন তুলছেন নাগরিকদের একটা বড় অংশ। ব্যবসায়ীদের একটি অংশ ইতিমধ্যেই দাবি করছেন, শিলিগুড়িতে সব সময়েই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
শহরের পুলিশকর্তারা অবশ্য দু’টি ক্ষেত্রে কোনও ফারাক রয়েছে বলে মানতে নারাজ। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুসারে প্রতি লকডাউনেই পুলিশ যথাযথ ভূমিকা পালন করছে। কোনও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy