জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত।— ফাইল চিত্র।
জমির বেআইনি কারবারের অভিযোগে ধৃত তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মতকে নতুন করে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, আজ, সোমবার শিলিগুড়ির এসিজেএম আদালতে হেফাজতের আবেদন করার কথা মাটিগাড়া থানার পুলিশ অফিসারদের। সম্প্রতি এই থানায় পিনটেল ভিলেজ লাগোয়া একটি চার একরের জমি দখলের মামলায় নতুন করে হিম্মতের নাম জড়িয়েছে।
গত শুক্রবার আদালতে এই মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। জেল হেফাজত থেকে হিম্মতকে আদালতে হাজির করে মামলাটি শুনানি হওয়ার কথা। সেখানে পুলিশ নতুন করে হেফাজতের আবেদন জানাবে বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, জমির ওই চক্রে বাইরের জেলা এবং রাজ্যের কিছু লোকজন জড়িত রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। সেই তথ্য খতিয়ে দেখার জন্য হিম্মতকে টানা জেরা করা প্রয়োজন।
৫ অগস্ট গ্রেফতারের পর থেকে হিম্মত হেফাজত রয়েছে। প্রথমে পুলিশের হেফাজতে থাকলেও বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে। চারটি মামলায় জামিন পেলেও নতুন করে মাটিগাড়া থানার মামলা জুড়ে যাওয়ায় হিম্মত এখনও ছাড়া পাননি। তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় সাহা বারবার দাবি করে বলেছেন, ‘‘আমার মক্কেলকে বারবার নতুন মামলায় ফাঁসিয়ে আটকে রাখছে পুলিশ। ২০১৭ সালের মামলায় এখন জড়ানো হচ্ছে।’’
পুলিশের দাবি, ২০১৫ সালে পুরভোটে শাসক দলের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তাঁর প্রভাব রাতারাতি বাড়ছিল। বিভিন্ন মহলে ওঠাবসা শুরু করেন হিম্মত। পরিবহণ দিয়ে শুরু হওয়া ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। তারপরেই একদল যুবককে নিয়ে জমি কারবার শুরু করেন তিনি। সরকারি-বেসরকারি জমি, আদিবাসীদের জমি বা খালি পড়ে থাকা খাস জমি দখল করার অভিযোগ উঠতে থাকে হিম্মতের বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে সরকারি জমিতে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির অভিযোগও উঠেছে
হিম্মতের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পূর্ত দফতরের করা মামলায় গ্রেফতার হন হিম্মত। সেই সময়েই পিনটেল ভিলেজ লাগোয়া জমিটি হিম্মত দলবল নিয়ে দখল করে বিক্রি করেছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ২০১৭ সালে পাপ্পু যাদব নামে ওই জমির মালিক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, তাঁর বাবার নামে থাকা ওই জমি প্রভাব খাটিয়ে দখল করে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল।
গত জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনিক বৈঠক থেকে নির্দেশ দেন। কমিশনারেটের প্রতিটি থানায় জমির দখলের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাগুলো নতুন করে তদন্ত করা শুরু হয়। তারপরেই হিম্মতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে শিলিগুড়ি পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy