প্রতীকী ছবি।
চিত্র-১। থানা চত্বরে পরপর সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে টহলদারি ভ্যান। প্রত্যেকটির দরজা তালা বন্ধ, জানলার কাঁচ তোলা। ধারে কাছে কোনও চালক বা পুলিশ কর্মী নেই। একটি ভ্যান বারবার থানার বাইরে যাচ্ছে, কিছুক্ষণ পর ঘুরে-ফিরে আবার আসছে। আবার টহলদারিতে বার হয়ে যাচ্ছে।
চিত্র-২। সাত সকালে রাজ্য সড়কের ধারে লাল রঙের পুলিশ ভ্যান এলাকায় নজরদারি করছে। দুপুরে হাট এলাকায় ভিড় বাড়তেই একই ভ্যান সেখানে হাজির। বিকেলে আবার সেই ভ্যানকেই দেখা যাচ্ছে, শহরের সোনার দোকানগুলোর সামনে নজরদারি করতে। অফিসার, কর্মীরাও একই।
চিত্র-৩। ডিউটি অফিসারের পাশেই বসে আছেন অফিসার ইনচার্জ। নথিপত্র তৈরিতেও সাহায্য করছেন। কোনও হোমগার্ড, কনস্টেবল নেই। থানার ফোনও ধরে বাসিন্দাদের নানা প্রশ্ন, অভিযোগ শুনছেন ওসি। ব্যবস্থাও নিচ্ছেন তিনি।
পুলিশ কর্মীদের বিভিন্ন জেলায় ভোটের ‘ডিউটি’র জেরে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের চারটি থানার এমনই পরিস্থিতি। বাকি দু’টি থানা জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে পড়ায়, সেখানে ভোট হচ্ছে। যা দেখে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে বাসিন্দাদের মনে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে। থানার পুলিশ কর্মীদের বক্তব্য, ‘‘কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। আর দুটো দিন পার করতে পারলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। বড় কিছু ঘটে গেল কী করে সামাল দেওয়া যাবে, কে জানে!’’
তাঁরা জানান, থানাগুলোতে হাতেগোনা যে ক’জন আছেন, বেশিরভাগই ব্যারাকে বা থানার ঘরে থাকছেন। সেখানেই দু’বেলা খাচ্ছেন। বাড়ি বা আবাসনে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। আর যাবেনই বা কী করে? টহলদারি থেকে নজরদারি, আইন শৃঙ্খলারক্ষা থেকে তদন্ত, তাঁদেরকেই ঘুরিয়ে ফুরিয়ে করতে হচ্ছে। দু’টি থানার অফিসারদের কথায়, ‘‘দু’দিন ধরে বাড়ি যাইনি। থানায় লোকই নেই। থানা পাহারাও দিতে হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, কমিশনারেটে শিলিগুড়ি, প্রধাননগর, ভক্তিনগর, মাটিগাড়া, বাগডোগরা এবং এনজেপি থানা রয়েছে। এ ছাড়াও আশিঘর, মিলনপল্লি, আমবাড়ি, খালপাড়া, পানিট্যাঙ্কির মত বড় ফাঁড়ি রয়েছে। কনস্টেবল, হোমগার্ড মিলিয়ে কমিশনারেটের ১২০০ জন পুলিশ কর্মী আছেন। অফিসারের সংখ্যা ৩০০ মত। এর মধ্যে ৯০০ মত পুলিশকর্মী বাইরে চলে গিয়েছেন। ২৫০ জন অফিসারও বাইরের জেলায়। ভরসা বলতে, ভক্তিনগর এবং এনজেপি থানার একাংশ, সেখানে ভোট হচ্ছে। তাই সেখানে পুলিশ রয়েছে। বাকি থানা-ফাঁড়িগুলোতে হাতেগোনা ৩-৪ অফিসার, ১-২ কনস্টেবল এবং গুটিকয়েক সিভিক ভলান্টিয়রদের দিয়ে চলছে।
থানার ওসি, আইসিদে’র নিজের গাড়ি নিয়ে গভীর রাত অবধি টহলদারি ভ্যানের কাজ সারতে হচ্ছে। অভিযোগ জমা পড়লে খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলে অভিযোগকারীর কাছে তদন্তের জন্য কয়েকদিন সময়ও চেয়ে নেওয়া হচ্ছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেছেন, ‘‘ভোটের কাজ তো করতে যেতেই হবে। বাকিরা সাধ্যমত থানা, ফাঁড়িতে কাজ করছেন। শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy