Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Poster

টাকা চাইলেই সোজা আমাকে জানান: আইসি নীহার বিশ্বাস হরিরামপুর

থানার আইসি সঞ্জীব বিশ্বাস সম্প্রতি থানার সামনে বিশাল পোস্টার লাগিয়েছেন। সেই পোস্টারে লেখা, 'থানার আইসির নাম করে কেউ যদি টাকা দাবি করে তাহলে তা বিশ্বাস করবেন না। সরাসরি বিষয়টি আইসিকে জানাবেন।'

বার্তা: থানায় পোস্টার।হরিরামপুরে। নিজস্ব চিত্র।

বার্তা: থানায় পোস্টার।হরিরামপুরে। নিজস্ব চিত্র।

নীহার বিশ্বাস
হরিরামপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:২১
Share: Save:

থানা চত্বরে কান পাতলেই শোনা যায়, মামলার ভয় দেখিয়ে পুলিশ কর্মীদের একাংশ টাকা তোলেন। বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে, টাকা ছাড়া থানায় কোনও মামলার মীমাংসা হয় না। সে জমি সংক্রান্ত বিবাদই হোক আর মারপিট। অভিযোগ করতে গেলেই টাকা চাওয়া হয়। যে পক্ষ টাকা দেবে মামলা হালকা হবে, এমন অভিযোগও ওঠে। তাই পারতপক্ষে থানা-পুলিশ এড়িয়ে চলেন সাধারণ মানুষ। সমস্যা মেটানোর জন্য যারা আইনের রক্ষক, সেই পুলিশেদের একাংশের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার ভুরিভুরি অভিযোগও ওঠে। তাই বিভিন্ন সময়ে পুলিশ, প্রশাসনের উপর অনাস্থা থেকে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা যায়।

সেই আস্থা ফেরাতে এ বার উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানা। ওই থানার আইসি সঞ্জীব বিশ্বাস সম্প্রতি থানার সামনে বিশাল পোস্টার লাগিয়েছেন। সেই পোস্টারে লেখা, 'থানার আইসির নাম করে কেউ যদি টাকা দাবি করে তাহলে তা বিশ্বাস করবেন না। সরাসরি বিষয়টি আইসিকে জানাবেন।' এ দিকে এমন পোস্টার পড়তেই কার্যত হইচই পড়েছে। কারণ এমন পোস্টার দেওয়ার অর্থ, পুলিশকর্মীদের একাংশ যে সত্যিই আইনের 'ভয়' দেখিয়ে টাকা তোলেন তা ঘুরিয়ে স্বীকার করা। হরিরামপুরের আইসি সঞ্জীব বিশ্বাস বলেন, "অনেক সময় টাকা চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ আমাদের কানে আসে।" তাঁর দাবি, এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে। তিনি বলেন, "মানুষের সমস্যা মেটাতেই থানা তৈরি হয়েছে। সমস্যার সুরাহা করার জন্যই আইন-কানুন। এর জন্য কোনও টাকার দরকার হয় না। কেউ যদি এমন দাবি করে তাহলে সরাসরি আমাকে যাতে জানানো হয় সেজন্যই এই পোস্টার।’’

এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বাসিন্দারা। অনেকে পোস্টারের ছবি ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিটি থানার তরফেই এমন সচেতনতামূলক প্রচার করা উচিত। তা হলেই দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশকর্মীরা মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিতে পারবে না। এলাকার বাসিন্দা রামাশঙ্কর সিংহ বলেন, "হরিরামপুর থানার আইসির এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা নিয়ে পুলিশের কাছে গেলে টাকা নেওয়া হয়। এ বার অন্তত এই দুর্নীতি বন্ধ হবে।" তবে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। তিনি বলেন, "এ ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। যা বলার হরিরামপুরের আইসি বলবেন।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Poster Harirampur Police extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE