ত্রিপলই ভরসা: আড়াইডাঙায় চলছে ক্লাস। নিজস্ব িচত্র
চারদিক খোলা ত্রিপলের তলায় পড়াশোনা করছে কয়েক জন। বসার জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে হয়েছে চট। এটাই মালদহের রতুয়া ২ ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গৌরীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল শুরু হলে পাশের বাড়ি থেকে শিক্ষকদের জন্য আনা হয় চেয়ার। গত ১৭ বছর ধরে ঠিক এ ভাবেই চলছে এই বিদ্যালয়টি।
নিজস্ব জমি না থাকায় আজও তৈরি হয়নি স্কুলের ভবন। কিন্তু কেন এত বছরেও প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি—সেই প্রশ্নে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। সরকারি খাস জমিটি স্কুলের নামে করার জন্য বছরের পর বছর ধরে হন্যে হয়ে ঘুরলেও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ। এ বার তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে খবর।
সমস্যার কথা অজানা নয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদেরও। সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘জমিটি স্কুলের নামে করার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরে আবেদন করা হয়েছে।’’ কিন্তু খাস জমি এত দিনেও কেন স্কুলের নামে হস্তান্তর হল না, বাসিন্দাদের পাশাপাশি সে প্রশ্ন তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষও। যদিও ওই জমিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন, কৃষকদের অতিথিশালা তৈরি হয়েছে বলে খবর। স্কুল সূত্রে খবর, ২০০২ সালের ৯ জানুয়ারি খাস জমিতে স্কুলটি চালু হয়। বলা হয়েছিল জমিটি স্কুলের নামে হস্তান্তর করে শীঘ্রই ভবন তৈরি করা হবে। কিন্তু এত বছর গড়ালেও স্কুল চলছে সেই ত্রিপলের তলায়। স্কুলে রয়েছেন তিন জন শিক্ষক ও ৩৭ জন পড়ুয়া। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। পঞ্চায়েত সমিতি শৌচাগার তৈরি করলেও ঝড়ে তার টিনের ছাদ উড়ে গিয়ে সেটিও বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য।
এলাকার অভিভাবক সাধন ঘোষ, আনন্দ ঘোষরা জানান, একটা সরকারি স্কুল কী ভাবে চলছে ভাবতেই পারছি না। এ কারণে অনেকেই ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন বলে দাবি তাঁদের।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুমার বলেন, ‘‘খাস জমিটি স্কুলের নামে করার জন্য প্রশাসন, ভূমি সংস্কার দফতর, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত। শেষ চেষ্টা হিসেবে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানাবো ঠিক করেছি। তিনি জানলে নিশ্চয়ই নিমেষে জট খুলে যাবে।’’
রতুয়া ২ ব্লকের বিডিও সাহানাজ সোহেল বলেন, ‘‘কিছু দিন হল এই ব্লকে এসেছি। কোথায় কী সমস্যা, সব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy