Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ভয় শিকেয় তুলে নিজস্বী

কুমির ধরা পড়ার খবর চাউর হতেই ভোর থেকে পারলালপুর ঘাটে ভিড় জমান পারদেওনাপুর, শোভাপুর এলাকার মানুষ। কচিকাঁচারা তো বটেই, বড়রাও কুমিরের সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

ফের কুমিরের দেখা মিলল গঙ্গায়। শুভানিটোলা চরের পর এ বার পারলালপুরে। শনিবার ভোররাতে গঙ্গায় মাছ ধরার সময় কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারলালপুর ঘাট সংলগ্ন গঙ্গায় মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ে বিশাল আকৃতির একটি কুমির। মৎস্যজীবীরাই সেটিকে পাড়ে তোলেন এবং খবর দেন পুলিশে। বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ পৌঁছায়। পরে বনদফতরের কর্মীরা কুমিরটিকে ফরাক্কা ব্যারাজের উত্তরে গঙ্গার উজানে ছেড়ে দেয়।

কুমির ধরা পড়ার খবর চাউর হতেই ভোর থেকে পারলালপুর ঘাটে ভিড় জমান পারদেওনাপুর, শোভাপুর এলাকার মানুষ। কচিকাঁচারা তো বটেই, বড়রাও কুমিরের সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। লেখাপড়া শিকেয় তুলে সাতসকালে কুমির দেখতে হাজির তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া অজয় সিংহ ও পঞ্চম শ্রেণির তপন চৌধুরী বলে, ‘‘টিভিতে কুমির অনেক দেখেছি। কিন্তু একেবারে চোখের সামনে প্রথম দেখলাম। ভয় লাগছিল, তবুও ছবি তুললাম।’’ রান্নাবান্না ফেলে কোলের শিশু নিয়ে সেখানে হাজির হয়েছিলেন গৃহবধূ সুমি হালদার, মনসান চৌধুরীরা। তাঁরা বলেন, ‘‘চোখের সামনে কুমির দেখব, কোনও দিন তা ভাবিনি। রান্না ফেলে চলে এসেছি।’’

এ বছরের জানুয়ারির শুরুতে গঙ্গার কালিয়াচক ২ ব্লকের শুভানিটোলা চরে চাষ করতে গিয়ে একটি কুমিরের দেখা পেয়েছিলেন জাকির হোসেন, শাহজাহান শেখরা। এরপর মুর্শিদাবাদের দিকে আরও একবার কুমিরের দেখা মিলেছিল। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ন’টা নাগাদ ডিঙি নৌকা করে মাঝ গঙ্গায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন পারলালপুরের মৎস্যজীবী মহাদেব চৌধুরী, শ্রীবাস চৌধুরী সহ সাতজন।

শ্রীবাস চৌধুরী বলেন, “রাত তখন তিনটে হবে। সে সময় মহাদেবের জালে বড় কিছু একটা পড়ে। আমরা ভেবেছিলাম যে বড় মাছ। মহাদেব চিত্কার জুড়ে দেয় এবং আমরা সকলে মিলে জাল ধরে রাখি। কিন্তু তবুও আটকে রাখা যাচ্ছিল না। টর্চ জ্বেলেও কিছু দেখাও যায়নি। শেষমেশ সকলে মিলে জাল তুললে দেখা যায় এই কুমিরটি আটকে পড়েছে।’’

মহাদেব চৌধুরী বলেন, ‘‘এই নদীতে আরও অন্তত তিনটি কুমির রয়েছে। আমরা আতঙ্কিত। রাতে মাছ ধরতে যেতেই ভয় লাগছে।’’ অন্যদিন পারলালপুর ঘাটে অনেকে স্নান করতে এলেও এ দিন ভয়ে আর কেউ গঙ্গায় নামেননি। ভয়ে কাঁটা ফেরি নৌকায় করে পারলালপুর ঘাট থেকে ধুলিয়ান ঘাটে যাতায়াতকারী স্থানীয় বাসিন্দারাও। মালদহ জেলা বনাধিকারিক কৌশিক সরকার বলেন, ‘‘এই কুমিরটি মার্শ ক্রোকোডাইল। খুবই হিংস্র। আমরা এটিকে গঙ্গার উজানে ছেড়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crocodile Selfie
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE