শিলিগুড়ি কলেজ
কয়েক হাজার আবেদনকারীর নথি যাচাই করিয়ে বিতর্কে শিলিগুড়ি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে উঠেছে অভিযোগও। কীসের ভিত্তিতে তথ্য যাচাই হচ্ছে, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ।
অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষের দেওয়া তথ্য অনুসারে শিলিগুড়ি কলেজে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগ মিলিয়ে অনার্সের মোট আসন সংখ্যা ১৩৫৩। আবেদনকারীর সংখ্যা সাড়ে আট হাজারের বেশি। শিক্ষা দফতরের অনলাইন নির্দেশিকা জারির আগেই বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীর নথি যাচাই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল বলেই জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। কিন্তু নথি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আবেদনকারী এবং নির্দিষ্ট বিষয়ের আসন সংখ্যার কোনও আনুপাতিক হারও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। শিক্ষা দফতরের নতুন নির্দেশিকায় নথি যাচাই ছাড়াই ভর্তি নিতে হচ্ছে কলেজকে।
শিলিগুড়ি কলেজে এখন পর্যন্ত অনার্সের বহু আসন ফাঁকা পরে আছে। সেই আসনগুলিতে যাদের ভেরিফিকেশন হয়ে গিয়েছে তাঁরা, না নতুন আবেদনকারীরা সুযোগ পাবেন—তা নিয়ে হয়েছে জটিলতা।
কেন জটিলতা? কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা আবেদনকারীদের নম্বর দেখেই নথি যাচাইয়ে ডেকেছিলেন। সেক্ষেত্রে যাঁরা ভর্তির সুযোগ পাননি, তাঁরা নতুন করে ভর্তি হতে পারবেন না। কিন্তু অনার্সে অনেক আসন খালি রয়েছে। এখন অনলাইনে অনেকেই আবেদন করছেন। তাঁদের নম্বর আগে আবেদনকারীদের চেয়ে কম হয়, তা হলে কী হবে?
সেক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষর আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে দাবি। সেই সিদ্ধান্তটি হল, একবার যারা নথি যাচাইয়ের পরেও ভর্তি হতে পারেনি, তারা আর নতুন করে ভর্তি হতে পারবে না। কিন্তু এখন নতুন যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে? ইতিমধ্যে যাঁরা ভর্তি হতে পারেননি, তাঁদের চেয়েও কম নম্বর থাকলে নতুন আবেদনকারীদের ভর্তি নেওয়া হবে? তা নাহলে, অনার্সের আসন কি ফাঁকা থাকবে?
অনেকে আবার নথি যাচাইয়ের সময় উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে সুযোগ পাননি। সুজিতবাবু বলেন, ‘‘কেউ যদি ভেরিফিকেশনে উপস্থিত থাকতে না পারেন, সেটা আমাদের গাফিলতি নয়। একবার ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলে আবেদনকারী পরে এসে ভর্তির দাবি করতে পারেন না। যা করছি সবটাই সরকারি নিয়ম মেনে।’’
কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য মানতে রাজি নয় ছাত্র সংগঠনগুলি। এসএফআই-এর দার্জিলিং জেলা সভাপতি সাগর শর্মা বলেন, ‘‘পুরো প্রক্রিয়া জটিলতায় ভরা। আনুপাতিক হারে ভেরিফিকেশন না করানোর ফলে বহু মেধাবী ছাত্র-ছাত্র বঞ্চিত হবেন। কলেজে ভর্তি নিয়ে অনেক অনিয়ম হয়েছে।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দার্জিলিং জেলা কার্যকরী সভাপতি মিঠুন বৈশ্য বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি মহকুমায় শুধুমাত্র শিলিগুড়ি কলেজেই ভেরিফিকেশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে কর্তৃপক্ষ আইনের বাইরে কোনও কাজ করেছেন বলে আমরা মনে করছি না।’’ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিলের সচিব নূপুর দাসের বক্তব্য, ‘‘শিলিগুড়ি কলেজের বিষয়গুলি নিয়ে মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy