ভিড়: বন সহায়ক পদে আবেদনপত্র জমা দিতে প্রার্থীদের লাইন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অফিসে। সোমবার। ছবি: নারায়ণ দে
করোনা আবহে রাজ্য জুড়ে অস্থায়ী ভাবে দুই হাজার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হল বন দফতরে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে নিজেদের পায়ের নীচের জমি শক্ত করতেই করোনা সতর্কতাকে উপেক্ষা করে এই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল সরকার। যদিও বিরোধীদের এই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী।
বন দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্যের জেলাগুলোয় মোট ২ হাজার বন সহায়ক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় যে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বন কর্তারা জানিয়েছেন, বন সহায়ক পদটি দফতরে সম্পূর্ণ নতুন একটি পদ। তবে এই পদে দুই হাজার কর্মীর প্রত্যেককেই অবশ্য অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হবে। যাঁরা মূলত বন মজদুর ও বন শ্রমিকদের মতোই ফরেস্ট গার্ডদের সঙ্গে বন সুরক্ষার কাজ করবেন।
রাজ্যের বন কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন বনাঞ্চল ও সেখানে থাকা বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য বহু কর্মী প্রয়োজন। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকেই বন দফতরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ। ফরেস্ট গার্ডদের বহু পোস্ট খালি পড়ে রয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ফরেস্ট গার্ডদের সঙ্গে জঙ্গল পাহারায় নিযুক্ত বন মজদুর ও বন শ্রমিকদের ১৯৯৮ সালে নিয়োগ করা হয়। সেই সময় তাঁদের সংখ্যাটা ছিল প্রায় আড়াই হাজার। কিন্তু বর্তমানে তা কমে এসেছে প্রায় সাতশোয়। এর ফলে বন সুরক্ষার কাজে একটা বড় প্রভাব পড়ছে। এই অবস্থায় বন সহায়ক পদে প্রায় দুই হাজার অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করার রাজ্যের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বন কর্তারা।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘রাজ্যের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। যত দ্রুত সম্ভব এই কর্মী নিয়োগের চেষ্টা চলছে।’’
তবে বন দফতরে অস্থায়ী পদে এই কর্মী নিয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হতে শুরু করেছে বিরোধীরা, বিশেষ করে বিজেপির নেতারা। দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনেই তৃণমূলের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে গিয়েছে। এই অবস্থায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জেলায় জেলায় কিছু পরিবারের ভোট টানতেই করোনা আবহে এই নিয়োগের সিদ্ধান্ত। এতে তৃণমূলের লাভ হবে না।’’
রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০০৯ সালে শেষবার বন দফতরে কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। এই অবস্থায় নতুন করে আরও নিয়োগের প্রয়োজন ছিল। অনেকদিন থেকে সেই দাবিও উঠেছিল। সেকথা মাথায় রেখেই এই নিয়োগ করা হচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy