একসঙ্গে: উদ্বোধনে রবি-উদয়ন। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা নির্বাচনের মুখে ফের হাতে হাত মেলালেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও উদয়ন গুহ। অন্তত ছ’মাস পরে কোচবিহারের এই দুই নেতাকে রবিবার এমন কাছাকাছি দেখা যায়। এ দিন একটি রাস্তা উদ্বোধনে এক সঙ্গে দেখা যায় দুই নেতাকে। পরে রবীন্দ্রনাথবাবুর বাড়িতেও দু’জন বৈঠকও করেন।
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীও। উদয়নবাবু দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক। বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্রের খবর, এই দুইজনের গোষ্ঠীর লড়াই একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। যা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব সতর্ক করেছেন বলেও দল সূত্রে খবর। এ দিন অবশ্য কেউই কোনও বিরোধের কথা মানতে চাননি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কোনও বিরোধ কখনও ছিল না।” উদয়নবাবু বলেন, “দলের দ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপারই নেই।” তাহলে অনেকদিন দু’জনকে একসঙ্গে দেখা যায়নি কেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে উদয়নবাবু বলেন, “নানা কাজে সবাই ব্যস্ত ছিলাম। তাই কিছুদিন দেখা হয়নি।”
একসময় ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। সেই সময় থেকেই রবি-উদয়নের সম্পর্ক নিয়ে চর্চা শুরু হয় কোচবিহারে। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথমদিকে দুজনের মধ্যে তীব্র বিরোধ ছিল। এমনকি দুই পক্ষের অনুগামীদের টানা সংঘর্ষের জেরে কোচবিহারে রাজ্য নেতারাও এসে বার্তা দেন বলে দল সূত্রে খবর। তার কয়েক মাস পরেই আবার দুই নেতার সম্পর্কের উন্নতি হয় বলে দলের কর্মীদের একাংশের দাবি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে আবার রবীন্দ্রনাথবাবু ও উদয়নবাবুর বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে বলে দল সূত্রে খবর। তার পর থেকে দুই নেতাকে আর কাছাকাছি দেখা যেত না। এমনকি দিনহাটাতেও দু’পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণা করে। একাধিক কর্মসূচিতে দু’পক্ষ আলাদা আলাদা ভাবে মিটিং-মিছিলও করে।
কয়েক মাস ধরেই দিনহাটা তথা কোচবিহারেও তাদের সংগঠনের উন্নতি হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। দিনহাটাতেই তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক অশোক মণ্ডল এখন বিজেপিতে রয়েছেন। দিনহাটার ভেটাগুড়ির বাসিন্দা তৃণমূলের আরেক বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা নিশীথ প্রামাণিক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। দিনহাটায় ওই নেতার প্রভাব রয়েছে বলেও তৃণমূলকর্মীদের একাংশের মত। এই অবস্থায় দলীয় নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ না হতে পারলে লোকসভা নির্বাচনে ফল খারাপ হতে পারে বলেও তৃণমূলকর্মীদের একাংশের দাবি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক জেলা নেতা বলেন, “ভোটের সময় ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে লাভ কারও হবে না। তা বুঝতে পেরেই দুই নেতা একসঙ্গে হয়েছেন।” এদিন রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া, দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুর আলম হোসেন, দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের সভাপতি মীর হুমায়ন কবীর এবং উদয়নবাবুকে নিয়ে নিজের বাড়িতে বৈঠক করেন রবীন্দ্রনাথবাবু।
বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “নেতারা যতই এক হন না কেন তাতে কোনও অসুবিধে নেই। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষ এক হয়ে গিয়েছে, তাঁরা বিজেপির সঙ্গে রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy