উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
‘কাকা’ ডাকে কারও কখনও আপত্তি ছিল না। তিনি বলিউডের রাজেশ খন্নাই হন, আর রাজনীতির মুজফ্ফর আহমেদ। সিপিএমের বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যকেও অনেকে ‘কাকা’ বলে ডাকেন। তিনিও আপত্তি করেন না। ‘কাকা’ বা ‘চাচা’ নিয়ে তো সাহিত্যে কাহিনির শেষ নেই। কিন্তু কোচবিহারের রাজনীতিবিদ তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এই ‘কাকা’ ডাকেই ফরমান জারি করেছেন। তিনি হাত জোড় করে জানিয়েছেন, তাঁকে যেন কেউ ‘কাকা’ না ডাকেন। ভাইপোর অবশ্য কেউই কাকার নির্দেশ বা অনুরোধ কোনওটাই রাখতে রাজি নন। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, ‘কাকা’ ছাড়া তাঁরা অন্য কিছু ভাবতেই পারেন না। যা শুনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমি ওই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না। যা বলার একবারই বলেছি।”
এ বারে দেখা যাক, কারা কারা রবীন্দ্রনাথবাবুকে ‘কাকা’ ডাকেন।
প্রথমেই আসবে কোচবিহারের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের নাম। এর পরেই রয়েছেন তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের কার্যকরী সভাপতি আজিজুল হক, দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুর আলম হোসেন এবং জেলা পরিষদের সদস্যা শুচিস্মিতা দেবশর্মা। যাঁদের কেউই ‘কাকা’ ডাক ছাড়তে রাজি নন।
আরও পড়ুন:অবাধ অযোধ্যা: অধিগ্রহণ বৈধ, এ বার মূল মামলা
দলীয় সূত্রের খবর, এক সময় পার্থবাবু মন্ত্রীর একান্ত অনুগত ছিলেন। সাংসদ হওয়ার এক বছরের মধ্যে দু’জনের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। পার্থবাবু এখন রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা। সেই আক্ষেপেই আর ‘কাকা’ ডাক শুনতে চান না মন্ত্রী।
কাকা-কাহিনি
সাংসদ পার্থবাবু বলেন, “এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তাঁর পিছনে বড় অবদান রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। আমি যাকে ‘কাকা’ বলে ডাকি। তিনি কাকে ‘কাকা’ বলে ডাকতে নিষেধ করেছেন তা আমি জানি না। এখনও কাকা বলেই ডাকব।”
আজিজুল হককে দল কোচবিহার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কাকা আমাদের সব কিছু। তাঁর হাত ধরেই রাজনীতিতে আসা। তাঁকে দেখেই চলা। আসলে অনেকে বাম সংগঠন থেকে এসে মধুর স্বরে ‘কাকা’ ডাকতেন।
তাঁরা রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাঁদেরই কাকা ডাকতে করেছেন বলেই আমার মনে হয়।” রবীন্দ্রনাথবাবুর আর এক ভাইপো দিনহাটার ১ নম্বরের তৃণমূল সভাপতি নুর আলম হোসেন, “রবীন্দ্রনাথবাবুকে ‘কাকা’ বলে ডেকে অনেকে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। সে কারণেই তিনি আর কাকা ডাক শুনবেন না বলেছেন বলে মনে হয় আমার। কিন্তু আমরা ‘কাকা’কে ছাড়া অন্য কিছু বুঝি না। এমন কাজ করতে হবে, যাতে ‘কাকা’ আবার ওই ডাক ভালবাসে।”
শুচিস্মিতা দেবশর্মারও কথায়, “কাকা ছাড়া এই পরিবারের কথা ভাবা যায় না। তাই অন্য কিছু ভাবছি না।”
কাকা-ভাইপোদের এই লড়াইয়ে অবশ্য খুবই খুশি বিরোধীরা। এই বিষয়ে বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “কাকার সঙ্গে যারা ছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই খুবই ভাল জায়গায় পৌঁছেছেন। এখন অবশ্য দেখার যে কাকার সঙ্গ ছাড়লে ঠিক কী হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy