ঝুলন্ত: দু’বছর আগে ভেঙে যাওয়া তেলতা সেতু। ফের যাতে এ অবস্থা না হয় তা ঠেকাতেই দাওয়াই রেলের। —ফাইল চিত্র
সুধানী নদীর জল যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে কপালের ভাঁজ বাড়ছে রেল কর্তাদের। আতঙ্কে রয়েছে যাত্রীদের অনেকেই। দু’বছর আগে এই সময়ই সুধানীর জল ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল রেল লাইনের নীচের মাটি-পাথর। শূন্যে ঝুলে ছিল রেল লাইন। তেলতা রেল সেতুর সঙ্গে ভূখণ্ডের যোগাযোগের ‘অ্যাপ্রোচ’ ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল জলের স্রোত। শুধু জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করতেই লেগেছিল বাইশ দিন। নামানো হয়েছিল সেনাও। তত দিন রেলপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের রেল যোগাযোগও। এ বারেও বাড়তেও শুরু করেছে সুধানীর জল। দু বছর আগের দুর্যোগ এড়াতে এ বছর আগেই নজরদারি শুরু করেছে রেল।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের দাবি, নজরদারির জন্য দল তৈরি হয়েছে। রাত দিন নজরদারি চলছে। যখনই জল এতটুকুও বাড়ছে কন্ট্রোল রুমে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আচমকা জল বেড়ে লাইনে অথবা সেতুতে ক্ষতি হতে পারে এমন আঁচ পেলেই যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বন্দোবস্তও রেখেছে রেল। প্রবল বৃষ্টিতে ধস ঠেকাতে এবং মাটি ধুয়ে যাওয়া ঠেকাতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ২৩৫ ওয়াগন বোল্ডারের ব্যবস্থা রাখছে। তার বড় অংশ রেখে দেওয়া হয়েছে তেলতার জন্য। রাখা হয়েছে তারজালি এবং পর্যাপ্ত শ্রমিকও। যাতে ক্ষতি হলে দ্রুত মেরামতি কাজ শুরু করা যায়। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজোতি শর্মা বলেন, “তেলতা সেতুতে নিয়মিত নজরদারি চলছে। নজরদারি চলছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীর উপর সেতুগুলিতেও। বিশেষ নজরদারি দল তৈরি থাকছে। দিনে এবং রাতে ট্রেন যাওয়ার আগে এলাকা নির্দিষ্ট করে নজরদারি চালাবে তারা।’’
তেলতা ছাড়াও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের অধীনে মোট ২৭টি বিপজ্জনক জায়গা চিহ্নিত করে বিশেষ নজরদারি চলছে। আবহাওয়া এবং নদীর গতিবিধি নিয়মিত রেলের চালক, স্টেশন মাস্টার, ট্র্যাক এবং সিগন্যালিং সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের জানানো হবে। সেই সঙ্গে তেলটা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলের সময় গতিবেগ কম রাখতেও নির্দেশ দিয়েছে রেল। একাধিক রাজধানী এবূং শতাব্দীর মতো দ্রুতগামী ট্রেন এই সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে, সেই ট্রেনগুলিকেও গতিবেগ কমাতে হবে।
রেলের দাবি, এখন সেতুর পরিস্থিতি ভাল রয়েছে। তবে সেতুটি ভেঙে নতুন করে তৈরি প্রয়োজন বলে রেল সূত্রের খবর। দু’বছর আগের বিপর্যয়ের পরে প্রায় সাত মাস ধরে তেলটা সেতু এবং দু দিকের মুখের মেরামতি চালিয়েছে রেল।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্তার কথায়, “অস্থায়ী ভিত্তিতে সেতু মেরামত হয়েছে। পুরোদস্তুর সংস্কার না করলে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়ার অবকাশ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy