পাশাপাশি: একসঙ্গে রাসমেলায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
পানের পাতায় জ্বলছে আগুন। সেটাই বিশেষ কায়দায় গুটিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতার মুখে। এ বারের রাসমেলায় হটকেক এই ‘ফায়ার পান’। আগুন জ্বলা সেই পান খেতে ভিড় করছেন সবাই। আর যারা খেতে সাহস পাচ্ছেন না, তাঁরা দেখেই সখ মেটাচ্ছেন। সেইসঙ্গে মোবাইল বন্দি হচ্ছে জ্বলন্ত পান খাওয়ার ছবি, ভিডিও।
মেলায় ঘুরতে আসা অনেকেই বেশ উচ্ছ্বসিত। তাঁরা বলছেন, ‘‘দারুণ ব্যাপার। রাসমেলা দেখতে এসে সত্যিই এক নতুন অভিজ্ঞতা।’’ কোচবিহারের বাসিন্দা চিত্রশিল্পী শ্রীহরি দত্ত বলেন, “আগুন জ্বলা পান যে খাওয়া যায় জানতামই না। ধারণা বদলে গেল।’’ স্বাদের টানে জ্বলন্ত পান যে মুখে নেওয়া যায় সেটাই তাঁর কাছে বেশি আকর্ষণের বলে জানিয়েছেন তিনি। ফায়ার পান খেয়ে দেখেছেন কোচবিহারের বাসিন্দা রাজা বৈদ্যও। তিনি বলেন, “মুখে পুরে দেওয়ার পরে মনেই হয়নি ওই পানে আগুন জ্বলছিল। বেশ অন্যরকম স্বাদ।’’
যার হাতের ‘ফায়ার পান’ নিয়ে এমন আলোচনা, সেই গোপাল সাহা বাসিন্দাদের উৎসাহ দেখে দারুণ খুশি। তুফানগঞ্জের আদি বাসিন্দা গোপালবাবু দিল্লিতে গিয়েছিলেন কাজের খোঁজে। সেখান থেকেই ওই পানের রেসিপি শিখেছেন তিনি। পরে বারাণসীতে একটি দোকানে ওই পান তৈরির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। রাসমেলায় শিকড়ের টানে ঘরে ফেরার সঙ্গে রোজগারের ইচ্ছেও ছিল। তার জন্যই তিনি ভরসা রেখেছিলেন ফায়ার পানে। গোপালবাবু জানান, “বারাণসী থেকে আনা পানপাতার ওপর কাজু, কিসমিস ও আরও উপকরণ সাজিয়ে একটি পাত্রে তা রাখা হয়। তারমধ্যে একটি মশলায় আগুন ধরিয়ে তা দ্রুত ক্রেতাদের মুখে পুরে দেওয়া হয়। মুখে যাওয়ার মূহূর্তের মধ্যে মিলিয়ে যায় ওই আগুন।
ঠিক কীসের উপর আগুন ধরানো হয় তা অবশ্য খোলসা করতে চাননি। মুচকি হেসে বলেন, “ওটাই তো অনেক কষ্টে শিখেছি।” তা শুনেই পাশে দাঁড়ানো এক ক্রেতার মন্তব্য, ‘‘এটা বিজনেস সিক্রেট। সহজে জানা যাবে না।’’ আগুন পানের রস আস্বাদনে খরচ কত? বিক্রেতা জানাচ্ছেন, একটি পানের জন্য ৭০ টাকা নেওয়া হয়। যারা ওই পান খেতে ভরসা পাচ্ছেন না। তাঁদের জন্য রয়েছে রকমারি পান। তার মধ্যে রয়েছে বিশেষ উপকরণে সাজানো ‘চুসকে পান’। তাছাড়া রিমঝিম পান, বারাণসী পানের চাহিদাও রয়েছে। ১০ থেকে ৫০ টাকায় তা বিক্রিও হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy