প্রতীকী ছবি।
চা শ্রমিকদের মজুরি আরও বাড়তে চলেছে। গত মাস থেকে চা শ্রমিকদের মজুরির সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন ত্রাণ হিসে ১৭ টাকা ৫০ পয়সা জুড়ে দেওয়া হয়। এ বার রেশন বাবাদ আরও কিছু টাকা জুড়তে চলেছে মজুরির সঙ্গে।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গে আসছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সে সময়ে চা বাগানে রেশন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক রয়েছে। তাতেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হতে পারে। ওই বৈঠকের কিছু দিন পরেই ন্যূনতম মজুরি চুক্তি নিয়ে শ্রমিক-মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করতে আসা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের। সেই বৈঠকে এ নিয়ে সরকারি ঘোষণা হতে পারে। মলয়বাবু বলেন, ‘‘চা বাগানের রেশন নিয়ে খাদ্য দফতর উত্তরকন্যায় একটি বৈঠক করবে। চলতি মাসেই আমাদের দফতরেরও বৈঠক রয়েছে। সেখানে নতুন কোনও ঘোষণা করা যাবে বলে আশাবাদী।’’
একসময়ে চা বাগানের মালিকপক্ষই রেশন সরবরাহ করতেন। রেশন বাবাদ যে টাকা ব্যয় হতো তা মজুরির অংশ হিসেবেই দেখানো হতো। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন হওয়ার পর থেকে বাগান শ্রমিকদের রেশনের ভার সরকারই তুলে নেয়। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শ্রমিক পরিবার পিছু ৩৫ কেজি চাল-আটা পেয়ে আসছেন ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা শ্রমিকরা। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি ছিল, শ্রমিকদের মজুরিতে রেশনের অংশ বাবদ যে অর্থ ধরা থাকত নতুন নিয়মে সেটি আর মালিকদের দিতে হচ্ছিল না। তার ফলে আখেরে শ্রমিকরাই বঞ্চিত হতে শুরু করলেন। রেশনের ভার সরকার তুলে নেওয়ায় মজুরির যে অংশটি মালিকরা আনাজ হিসেবে ধরে দিতেন তার অর্থমূল্য টাকায় চুকিয়ে দেওয়া হোক বলে শ্রমিকদের দাবি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কলকাতাতেই শ্রম দফতরের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। একটা কথা বলতে পারি আমাদের সরকারের আমলে শ্রমিকরা কোনভাবেই বঞ্চিত হবেন না।’’
অন্তর্বর্তী ত্রাণ মিলিয়ে চা শ্রমিকেরা বর্তমানে দেড়শো টাকা মজুরি পান। চা শ্রমিকদের দাবি রেশন বাবদ অন্তত ২৬ টাকা পাওয়া উচিত। চা শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের সদস্য তথা এনইউপিডব্লিউ নেতা মণিকুমার ডার্নাল বলেন, ‘‘রেশন বাবদ অতিরিক্ত ২৬ টাকা দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারই ঘোষণা করেছিল। তার রূপায়ণ এখনও হয়নি। ন্যূনতম মজুরি চুক্তি নিয়েও টালবাহানা করছে।’’
খাদ্য দফতরের দাবি, রেশন বাবদ মজুরি দেওয়া নিয়ে শ্রম দফতরের সঙ্গে বৈঠকে ইতিমধ্যেই নৈতিক সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। সিদ্ধান্ত রূপায়ণ হলে চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়বে।
তবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াই এক তরফা ভাবে মজুরি বাড়ানোয় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তাদের বক্তব্য, চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তারা দীর্ঘ দিন আন্দোলন করছে। কিন্তু তাদের এড়িয়ে রাজ্য সরকার এক তরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ওই টাকা নিতে অস্বীকার করছেন শ্রমিকরা। তাদের দাবি, পুলিশ দিয়ে তাঁদের ১৫০ টাকা দৈনিক মজুরি নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিউসি-সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ক্ষোভ, অবিলম্বে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বসে দৈনিক মজুরি বাড়ানো না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy