Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কম্পনে স্কুলে ফাটল, ক্লাস হয় বাইরে

দু’হাজার পড়ুয়ার জন্য ক্লাসঘরের সংখ্যা ৩৫টি। ভূমিকম্পের জেরে দেওয়ালগুলিতে ব্যাপক ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় গত দশদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ১৫টি ক্লাসঘর। যার ফলে এখন খোলা আকাশই সামিয়ানা। কখনও স্কুলের মাঠে, কখনও আবার কোনও ঘরে একই ক্লাসের তিনটি বিভাগের পড়ুয়াদের একসঙ্গে নিয়ে চলছে পঠনপাঠন।

খোলা আকাশের নীচেই চলছে ক্লাস।

খোলা আকাশের নীচেই চলছে ক্লাস।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০২:৫৮
Share: Save:

দু’হাজার পড়ুয়ার জন্য ক্লাসঘরের সংখ্যা ৩৫টি। ভূমিকম্পের জেরে দেওয়ালগুলিতে ব্যাপক ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় গত দশদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ১৫টি ক্লাসঘর। যার ফলে এখন খোলা আকাশই সামিয়ানা। কখনও স্কুলের মাঠে, কখনও আবার কোনও ঘরে একই ক্লাসের তিনটি বিভাগের পড়ুয়াদের একসঙ্গে নিয়ে চলছে পঠনপাঠন। ফলে পড়াশোনার পরিবেশ একরকম শিকেয় উঠেছে মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচন্ডী গিরিজা সুন্দরী বিদ্যা মন্দিরে। পাশাপাশি আতঙ্কে ভুগছেন শিক্ষক ছাত্র ও অভিবাবকরা। স্কুল বাড়িটি মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে।

গত ২৫শে এপ্রিল ভূমিকম্পে মালদহ জেলার বেশ কয়েকটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কালিয়াচকের সুজাপুর হাই স্কুলের সিঁড়ির রেলিং ভেঙে পাঁচ পড়ুয়া গুরুতর জখম হন। সেই ভূমিকম্পেই হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচন্ডী গিরিজা সুন্দরী বিদ্যা মন্দিরে ক্লাসঘর গুলিতে ব্যাপক ফাটল ধরে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পে ৩৫টি শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ১৫টি শ্রেণিকক্ষে ব্যাপক আকারে ফাটল ধরায় সে গুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়াও মাঝারি মাপের চিড় ধরেছে যে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষে, সেখানে পঠনপাঠনের কাজ চালানো হচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জগদীশ সরকার বলেন, ‘‘ভুমিকম্পের দিন স্কুলের অধিকাংশ ঘরেই ফাটল ধরেছে। ফলে সেই ঘর গুলিতে ছেলেদের পড়াতে ভয় হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই আমরা গাছের নিচে এবং এক ঘরে তিনটি সেকশনের ছাত্রদের একসঙ্গে বসিয়ে পড়াশুনা করাচ্ছি। ফলে সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা করানো যাচ্ছে না। ঘর গুলি মেরামতের জন্য জেলা শিক্ষাদফতরে ছবিসহ লিখিত ভাবে পাঠিয়েছি।’’


স্কুলের দেওয়ালে ফাটল।

মালদহের জেলা বিদ্যালয় পরিদশর্ক(মাধ্যমিক)আশিস কুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার কাছে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠানো হবে পরীক্ষা করার জন্য। তারা রিপোর্ট দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। আশা করি তাড়াতাড়ি সমস্যা মেটানো হবে।’’

এদিকে ক্লাসঘরগুলিতে ব্যাপক ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে ভুগছেন পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকরা। দশম শ্রেণির ছাত্র সুমন গোস্বামী,বিশ্বদীপ সাহার কথায়, ‘‘স্কুলে আসতে ভয় হচ্ছে। আমাদের স্কুলের ঘর গুলি যেমন অবস্থায় রয়েছে,আবার ভুমিকম্প হলেই ভেঙে পড়বে। ভয়ে অনেক বন্ধু স্কুলে আসছে না।’’ আতঙ্কে উপস্থিতির হার যে কমেছে তা মানছেন শিক্ষকদের একাংশও।

বুলবুলচন্ডীর বাসিন্দা উৎপল গোস্বামী, মাধব সাহার মতো অভিভাবকেরা বলেন, ‘‘আমরা স্কুলে গিয়ে দেখেছি, দেওয়ালে দেওয়ালে ফাটল রয়েছে। এমন অবস্থায় ছেলেদের পাঠাতে ভয় হচ্ছে। দ্রুত মেরামত না করা হলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’

ক্লাসঘরের অভাবে পড়াশোনা যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনই গত দশদিন ধরে খোলা জায়গায় বসে মিড-ডে-মিলের খাবার খেতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এতেও চিন্তিত অভিভাবকরা।

ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE