Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
গাছ আগলে প্রতিবাদ, সঙ্গী পরিবেশকর্মীরাও

গাছ বাঁচাতে পথে বনবস্তির বাসিন্দারা

সবুজের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তাই অশনি সংকেত টের পেতেই গাছ আগলে বসে পড়লেন ওঁরা। দাবি, একটা গাছও কাটা যাবে না। রীতিমত প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে গাছ আগলাচ্ছেন বনবস্তির বাসিন্দারা।

প্রতিবাদ: লাটাগুড়িতে জাতীয় সড়কের ধারে গাছ কাটার বিরোধিতা করে চলছে প্ল্যাকার্ড লাগানো। আন্দোলনে বাসিন্দারা। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

প্রতিবাদ: লাটাগুড়িতে জাতীয় সড়কের ধারে গাছ কাটার বিরোধিতা করে চলছে প্ল্যাকার্ড লাগানো। আন্দোলনে বাসিন্দারা। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৮
Share: Save:

সবুজের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তাই অশনি সংকেত টের পেতেই গাছ আগলে বসে পড়লেন ওঁরা। দাবি, একটা গাছও কাটা যাবে না। রীতিমত প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে গাছ আগলাচ্ছেন বনবস্তির বাসিন্দারা। তাঁদের আন্দোলনে সামিল হয়েছেন বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরাও।

লাটাগুড়িতে রেললাইন ক্রসিং-এর ওপর উড়ালপুল তৈরি হবে৷ এজন্য গরুমারা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে জাতীয় সড়কের দু’ধারে প্রচুর গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ গাছগুলি চিহ্নিত করা শুরু হতেই প্রতিবাদে সরব হন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। এরইমধ্যে সোমবার সেখানে গাছ কাটা শুরু করে বন উন্নয়ন নিগম৷ গোটা দশেক গাছ কেটে ফেলার তা জানতে পেরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা৷ গাছ কাটতে বাধা দেওয়া হয় নিগমের কর্মীদের৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে বাকবিতণ্ডার পরে ফিরে যেতে হয় নিগমের কর্মীদের।

ফের গাছ কাটা হতে পারে এই আশঙ্কায় মঙ্গলবার সকাল থেকে সেখানে জড়ো হতে থাকেন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা৷ রীতিমত প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে গাছ পাহারা দিতে থাকেন তারা৷ এই পরিস্থিতিতে বেলা দশটা নাগাদ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কয়েকজন ওই এলাকায় গেলে একেক জন এক একটি গাছ আগলে দাঁড়িয়ে পড়েন৷ প্রতিবাদীদের সঙ্গে বচসা বেধে যায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের৷ তবে তাঁরা এ দিন গাছ কাটতে যাননি, এটা জানার পরেই শান্ত হন সবাই৷

যে সব পরিবেশপ্রেমী সংগঠন এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তাদের একটির কর্ণধার অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর ছিল এ দিন পুলিশ নিয়ে এসে গাছ কাটা হবে৷ তাই সকাল থেকে গাছ পাহারায় নামি৷ বুধবারও একইভাবে গাছ পাহারা দেওয়া হবে৷ কোনও অবস্থাতেই সবুজ ধ্বংস করতে দেব না৷’’

বাসিন্দাদের বাধায় অবশ্য আপাতত থমকে গিয়েছে গাছ কাটার কাজ।

সোমবার জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেছিলেন, ‘‘বনউন্নয়ন নিগম গাছ কাটার বিষয়টি পরিচালনা করছে। আমরা অনুমোদন দিয়েছি মাত্র।’’ কিন্তু উন্নয়নের প্রশ্নে এতগুলো গাছ কাটা কতটা যুক্তিযুক্ত সে বিষয়ে বনদফতরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলে নি। এ দিন লাটাগুড়িতে গাছ কাটা হয়নি৷ পরবর্তীতে কবে তা করা হবে সেটা এক্ষুনি বলা সম্ভব নয় বলে মঙ্গলবার জানান ডিএফও। বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘আপাতত লাটাগুড়িতে গাছ কাটা বন্ধ রয়েছে৷ গাছ কাটা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা মিটিয়ে নিগমকে জানানো হলে তবেই নিগম ফের গাছ কাটতে যাবে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Banner Tree Save Trees
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE