Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্ররোচনা দিয়ে বার্তা সেই ঘুরছেই

দাবি উঠেছে, ছেলেধরা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব বন্ধে পুলিশ ও প্রশাসন কি ব্যর্থ। যদিও জেলা পুলিশের সেই একই বক্তব্য, গুজব রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০২:০৬
Share: Save:

কড়া নজরদারি রাখার কথা পুলিশ বলেছিল বেশ কয়েক দিন আগে। কিন্তু মঙ্গলবারও ছেলেধরা সন্দেহে মালদহের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শহরে উস্কানিমূলক একটা ‘বার্তা’ ঘুরতে দেখা গেল হাতে হাতে। তাই দাবি উঠেছে, ছেলেধরা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব বন্ধে পুলিশ ও প্রশাসন কি ব্যর্থ। যদিও জেলা পুলিশের সেই একই বক্তব্য, গুজব রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

গত ৮ জুন থেকে মালদহে চলছে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি। তিনটি ব্লকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে মোট ন’টি। তার মধ্যে হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীতে ছেলেধরা সন্দেহে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। গুজব থেকেই সব ক’টি ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ এটাও জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক ‘মেসেজ’ ঘুরছে গ্রাম থেকে শহরে নানা জনের মোবাইলে। যা থেকেই গুজব ছড়াচ্ছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। এ বার তাই ওই বিভ্রান্তিকর ‘মেসেজ’ ছড়ানোর ঘটনায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করতে চলেছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে। গুজব রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিন্ রাজ্যের থেকে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ওই উস্কানিমূলক ‘মেসেজ’ ছড়ানো হচ্ছে। সেখান থেকেই ছড়াচ্ছে গুজব। ফলে অচেনা লোক দেখলেই সন্দেহ দানা বাঁধছে মানুষের মধ্যে। আর সেই সন্দেহ থেকেই শুরু হচ্ছে গণপিটুনি। এইসব ‘মেসেজ’ ছড়ানোর পিছনে কাদের মদত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, “বিজেপি কখনও ধর্মের নামে, আবার কখনও উস্কানিমূলক কথা প্রচার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আর তা থেকেই ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটছে।” জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের নেতারা এখন সব কিছুতেই বিজেপির ছায়া খুঁজে পান। যা ঘটছে তাতেই আমাদের নামে দায় চাপানো হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন শাসক দলের তাঁবেদারিতেই বেশি ব্যস্ত। যার জন্য জেলার আইনশৃঙ্খলার এই অব্যবস্থা।”

তবে শুরুর দিকে তৎপর না হলেও এখন ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা রুখতে তৎপর হয়ে উঠেছে জেলার পুলিশকর্তারা। এখন গণপিটুনির ঘটনা ঘটলেই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে গ্রেফতার করছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত পুলিশ ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

child lifter Malda মালদা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE