Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মানিকচকের সঙ্গে ‘সেতুবন্ধন’ সাবিত্রীরও

তৃণমূল শিবিরের একাংশের মতে, সেতুর উদ্বোধনে ফের মানিকচকবাসীর সঙ্গে সাবিত্রীর ‘সেতুবন্ধনে’র সুযোগ করলেন দলনেত্রী। 

সূচনা: ভুতনি সেতুর উদ্বোধনে সাবিত্রী। ফাইল চিত্র

সূচনা: ভুতনি সেতুর উদ্বোধনে সাবিত্রী। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানিকচক শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

মানিকচক ও ভুতনির মাঝে ফুলহার নদী। তাতে সেতু তৈরির জেরে মানিকচকের সঙ্গে জুড়ল ভুতনি। মালদহে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে রিমোটের মাধ্যমে বহু প্রতীক্ষিত সেই সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে গ্রামে গিয়ে সেই সেতুর উদ্বোধনে প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা।

তৃণমূল শিবিরের একাংশের মতে, সেতুর উদ্বোধনে ফের মানিকচকবাসীর সঙ্গে সাবিত্রীর ‘সেতুবন্ধনে’র সুযোগ করলেন দলনেত্রী।

মানিকচক ব্লক থেকে ভুতনিকে বিচ্ছিন্ন করে কার্যত দ্বীপে পরিণত করেছে গঙ্গা ও ফুলহার নদী। ভুতনিতে উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং হিরানন্দপুর— এই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে প্রায় ৬৩টি গ্রাম রয়েছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ভুতনিতে ৮৯ হাজার ২১ জনের বসবাস। এখন সেই সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। লক্ষাধিক মানুষের নদীপথে যাতায়াতের একমাত্র সম্বল ছিল নৌকা। ভরা বর্ষায় নৌকায় যাতায়াতে একাধিক বার প্রাণহানিরও ঘটনা ঘটেছে গঙ্গা এবং ফুলহার নদীতে। এমনকী, রাতে নদী পার হতে না পেরে বহু মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুও হয়েছে ভুতনিতে।

তাই ভুতনিবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, নদীর উপরে পাকা সেতুর। তৃণমূল সূত্রে খবর, ২০১১ সালে মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান সাবিত্রী মিত্র। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভুতনিতে সেতুর জন্য তদারকি শুরু করেন। এর পরেই ভুতনিতে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ফুলহার নদীতে সেতু তৈরির কাজ শুরু করে। সেতুটি প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ণ দফতর সেতুর জন্য প্রায় ১৩২ কোটি টাকা খরচ করে।

গত মঙ্গলবার মালদহে প্রশাসনিক বৈঠকে কলেজ অডিটোরিয়াম থেকে রিমোট কন্ট্রোলে ওই সেতুর উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সাবিত্রীকে গ্রামে গিয়ে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধনের নির্দেশ দেন।

দলের অন্দরমহলের খবর, ওই সেতুটি মাসছয়েক আগে মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল নিজেই উদ্যোগ নিয়ে উদ্বোধন করে দিয়েছিলেন। তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। ফলে সাবিত্রীকে দিয়ে সেতুর উদ্বোধন করানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেছে তৃণমূলেরই একাংশ। কারণ ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীর কাছে মাত্র ৬ হাজার ভোটে হেরেছিলেন সাবিত্রী। তার পর থেকে জেলার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে সম্প্রতি ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে মানিকচকে সাড়া ফেলেন সাবিত্রী। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, তাই তাঁকে দিয়ে সেতুর উদ্বোধন করিয়ে মানিকচকবাসীর সঙ্গে ‘সেতুবন্ধনে’র সুযোগ করে দিলেন মমতা।

মানিকচকের কংগ্রেস বিধায়ক মোত্তাকিম আলম বলেন, ‘‘ভুতনি সেতু নিয়ে তৃণমূল রাজনীতি করছে। তাই সেতু দিয়ে যতই মানুষের সঙ্গে সেতুবন্ধনের চেষ্টা করা হোক, কিছুই লাভ হবে না।’’ সাবিত্রী বলেন, ‘‘ভুতনিতে থানা, হাসপাতাল করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার বহু প্রতীক্ষিত সেতুও করে দিলেন। আশা করছি মানুষ এ বার নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন। আর আগামী দিনে মানিকচকের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই থাকবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fulahar River Sabitri Mitra Bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE