Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
School Student

পড়া বন্ধ, বাড়ির কাজে নেমেছে ওরা

কোচবিহারের অধিকাংশ স্কুলই গ্রামে। গ্রামেই বেশি মানুষ বসবাস করেন। গ্রামের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ অংশই কৃষিকাজের উপরে নির্ভরশীল।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২০ ০৬:৩৬
Share: Save:

কেউ পাটের আঁশ ছাড়াতে সহায়তা করছে মা-বাবাকে। কেউ আনাজের বাগানে কাজে নেমে পড়েছে। করোনা আবহে কার্যত পড়াশোনাও লাটে ওঠার জোগাড়। কোচবিহারে গ্রামের শিশুরা নেমে পড়েছে কৃষিকাজে। কেউ সকাল-বিকেল বাবার দোকানে বসছে। সব মিলিয়ে চিন্তায় শিক্ষকেরা। অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন এবং দিশাহারা। দেওয়ানহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত পাল বললেন, “আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি যাতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার মধ্যে থাকে। অভিভাবকদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগের চেষ্টা করছি।”

কোচবিহারের অধিকাংশ স্কুলই গ্রামে। গ্রামেই বেশি মানুষ বসবাস করেন। গ্রামের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ অংশই কৃষিকাজের উপরে নির্ভরশীল। এ ছাড়া একটি অংশের বাসিন্দারা স্কুল পাশ করতে পারেননি। স্বাভাবিক ভাবেই বাড়িতে শিশুদের বা স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় সাহায্য করতে পারছেন না। অনেকেরই টিউশনের শিক্ষক রাখার মতো আর্থিক অবস্থা নেই। স্বাভাবিক ভাবেই সেই পরিবারগুলোকে পড়াশোনা নিয়ে খুবই সমস্যা পড়তে হয়েছে। স্কুল পড়ুয়াদেরও বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগছে না। তাই তাঁরাও বাবা-মায়ের সঙ্গেই কাজে নেমে পড়েছে। এই ছবি জেলার প্রচুর গ্রামের। সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলিতেও একই অবস্থা।

ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক গ্রামে এমন অনেক পরিবার রয়েছেন। তোর্সা নদীর চর লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশের মানুষের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। কেউ দিনমজুরি করেন, কেউ নিজের সামান্য কৃষি জমিতে কাজ করে সংসার চালান। ওই এলাকার এক পঞ্চায়ের সদস্যার স্বামী নন্দ বর্মণ জানান, তাঁদের গ্রামে এমন অনেক বাসিন্দাই রয়েছেন। তিনি বলেন, “ছেলেমেয়েরা সবসময়ই বাবা-মায়ের কাজে সহযোগিতা করে। এখন তো স্কুল বন্ধ। আর সবারই টিউশন পড়ানোর সামর্থ্য নেই। তাই সবাই কৃষিকাজেই হাত দিচ্ছে।” দিনহাটার নাজিরহাটের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন জানান, তাঁদের গ্রামের আশরাফুল আলম দশম শ্রেণিতে পড়াশনা করে। প্রতিদিনই তাঁর বাবার কাজে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, “এখন তো পাটের আঁশ ছাড়ানো শুরু হয়েছে। সেই কাজে সহযোগিতা করে।” ওই গ্রামেরই দশম শ্রেণির ছাত্রী ইয়ারুন খাতুন বাড়ির কাজ করে মায়ের সঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Student Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE