কান্না: ভেঙে পড়েছে শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র
দিনহাটা থানার হেফাজতে এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশের মারেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। অন্য দিকে পুলিশের দাবি, অতিরিক্ত নেশা করার ফলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই যুবক। ভোর রাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের নাম সৌম্যদীপ চক্রবর্তী (২৫)। তাঁর বাড়ি দিনহাটার বউবাজার এলাকায়। সোমবার গভীর রাতে ওই এলাকারই একটি এটিএম কাউন্টারের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, মদ্যপ অবস্থায় সেখানে হল্লা করছিলেন তিনি। কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁকে রোখারও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। তাঁদের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দিনহাটা থানার পুলিশ। এর পরেই ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। লক আপে ওই যুবক ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরের দিকে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সৌম্যদীপের মামা রতন সরখেল বলেন, “ও মদ খেত বলে জানি। তবে ওঁর মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। সঠিক ভাবে কিছু বুঝতে পারছি না। ঘটনার তদন্ত দাবি করছি।”
গ্রেফতারের পর ওই যুবকের কাছ থেকে বেশ কিছু নেশার ট্যাবলেট মেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহও পুলিশ হেফাজতে ওই শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ওই যুবক নেশাগ্রস্ত ছিলেন, এটা ঠিক। কিন্তু পুলিশ লক আপে কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত।” তদন্তের দাবিতে সরব প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশও। সেই দলে আছেন শাসক দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতা ধর্মেন্দ্র সিংহও। তিনি বলেন, “পুরো ঘটনায় অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। তদন্ত হলেই সবটা পরিষ্কার হবে বলে মনে করছি।” দিনহাটার টিয়াদহ গোর্খারপাড় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন সৌম্যদীপ। বছর খানেক আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। এক বোনও হাইস্কুলে চাকরি করেন। সৌম্যদীপের মৃত্যুতে পরিবারের তরফে এখনও অবশ্য অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy