প্রতীকী ছবি।
কেউ নিজের সন্তানকে প্রাইভেট টিউটর দেননি। নিজেরাই সাহায্য করেন পড়াশোনায়। কেউ আবার উঁচু ক্লাসের পাঠক্রম সে ভাবে পড়াতে পারছেন না। কিন্তু ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকে সতর্ক নজর রাখেন সব সময়। স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানে জায়গাও পেয়েছে তাঁদের সন্তানেরা। ছেলেমেয়েদের ‘প্রথম শিক্ষক’ হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতি পেলেন ওই মায়েরা সকলেই। শিক্ষক দিবসের আগের দিন তাঁদের সম্মানিত করল দিনহাটার জোরপাকুড়ি হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার স্কুলের মঞ্চে ডেকে ফুলের তোড়া, মানপত্র, স্মারক উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হল তাঁদের হাতে।
জোরপাকুড়ি হাইস্কুলের সুর্বণ জয়ন্তী বর্ষ চলছে। সোমবার ছিল সবুজ সাথী সাইকেল বিলির অনুষ্ঠান। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা আনার ভাবনা থেকে নতুন কিছু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঠিক হয়, ২০১৬ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারীদের মায়েদের সম্মান জানানো হবে। তার পরেই তৈরি হয় ১৮ জনের তালিকা। সেই মতো সোমবার অনুষ্ঠান মঞ্চে সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৭ জন উপস্থিত হন। স্কুলের এমন স্বীকৃতিতে যারপরনাই খুশি ওই মায়েরা।
তাঁদের একজন বহ্নি সরকার বলেন, “মেয়ে জয়ী ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। এখনও টিউটর নেয় না। আমি স্নাতক। বাড়িতে সব বিষয়ই পড়াই। মেয়ের স্কুলে এ ভাবে সম্মান পাব ভাবিনি। সত্যিই দারুণ লাগছে।” আর এক অভিভাবিকা নুরনাহার বিবি বলেন, “স্বামী কৃষিকাজ করেন। তিন ছেলেমেয়েকে প্রাথমিক পাঠ আমিই দিয়েছে। দুই মেয়ে উঁচু ক্লাসে উঠেছে। আমার পক্ষে সরাসরি পড়ানো সম্ভব হয় না। তবে নজর রাখি।” মিঠু বাগচি, মণিকা দেবনাথরা জানিয়েছেন, মায়েদের অবদান স্কুলে এভাবে স্বীকৃতি পেল এটাই বড়প্রাপ্তি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৌশিক সরকার বলেন, “শিক্ষক দিবসে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সন্মান জানান হয়। সন্তানের প্রথম শিক্ষক এই মায়েরা ব্রাত্য থাকেন বলে অনেকে আক্ষেপ করতেন। সেটা ঘোচাতে চেয়েছি।"
স্কুলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, “শিশুর বিকাশে মায়েদের ভূমিকা সবার আগে। অন্য মায়েরাও উৎসাহিত হবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy