Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুকুরে গাড়ি পড়ে মৃত ৭

শনিবার ভোর সাড়ে ৩ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার জিরাণপুরের টুপামারি এলাকায়। ঘটনার পর পরই পিছনে থাকা বরযাত্রীদের আরেকটি গাড়ি ছিল।

হাহাকার: দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ দেখে ভেঙে পড়েছেন এক পরিজন। শনিবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র

হাহাকার: দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ দেখে ভেঙে পড়েছেন এক পরিজন। শনিবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

বরযাত্রীর নিমন্ত্রণ থেকে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি উল্টে পুকুরে পড়ে যাওয়ায় এক শিশু সহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার ভোর সাড়ে ৩ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার জিরাণপুরের টুপামারি এলাকায়। ঘটনার পর পরই পিছনে থাকা বরযাত্রীদের আরেকটি গাড়ি ছিল। ওই গাড়ির যাত্রীরা পুকুরে নেমে মৃতদের বাঁচানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। ২ জনকে জল থেকে তুলে আনলেও বাঁচানো যায়নি। বাকিদের দমকল গিয়ে উদ্ধার করে।

মৃতদের নাম গোপাল সাহা (৩৭), সাধন সাহা (৩৫), বলরাম সাহা (৩৮), সুব্রত সাহা (৩২), গোলাপ দেব (৪০), বাপি বর্মন (২৫), নিকিতা সাহা (৭)। প্রত্যেকের বাড়ি ভেটাগুড়ি বাজার সংলগ্ন এলাকায়। গোপালবাবু ও সাধনবাবু দুই ভাই। সাধনবাবুর মেয়ে নিকিতা। ওই ঘটনায় গোটা এলাকা শোকস্তব্ধ। রাতেই ঘটনাস্থলে যান কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তাঁর বাড়ির কাছেই ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি বলেন, “গভীর রাতে প্রথমটায় কেউ বুঝতে পারেননি। যখন হইচই শুরু তখন দেরি হয়ে যায়।”

জেলাশাসক কৌশিক সাহা বিষয়টি নিয়ে রাতেই খোঁজখবর শুরু করেন। তিনি বলেন, “পুলিশ-প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে উদ্ধার কাজ করে। তার পরেও কাউকে বাঁচানো যায়নি। দুর্ঘটনায় সরকারি তরফের ক্ষতিপূরণ এ দিনই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বাঁক নিতে গিয়েই গাড়ি জলে পড়ে যায়, প্রাথমিক ভাবে এমনটাই জানা গিয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, সাধনবাবুর কাকাতো ভাইয়ের বিয়ে ছিল বক্সিরহাটের বাকলায়। ভেটাগুড়ি থেকে জিরানপুর হয়ে কালজানি নদী পার হয়ে বক্সিরহাট যাওয়ার রাস্তা আছে। ওই পথ ধরেই ভেটাগুড়ি থেকে তাঁদের আত্মীয়-সহ প্রতিবেশীরা ওই বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে যোগ দেয়। সেখানে যাওয়ার জন্য একটি বড় গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল। সেই গাড়িতেই প্রত্যেকেই যায়। শুধু, মৃত সুব্রতবাবুর ছোটগাড়িতে সাধনবাবু ও তাঁর ছোট মেয়ে সহ সাতজন চাপে। ছোট ওই গাড়িতে বড়জোর পাঁচজন বসা যায়।

প্রায় একই সঙ্গে গাড়ি দুটি বক্সিরহাট থেকে রওনা হয়। বড় গাড়ির আগে আগেই ওই গাড়ি চলছিল। ছোট গাড়ির গতি একটু বেশি ছিল বলে অভিযোগ। টুপামারির ওই জায়গায় অনেকটা অংশ রাস্তা বেকে গিয়েছে। পাশে একটু পুকুর ছিল। গাড়ি বাঁক নিতে গিয়েই চাকা রাস্তার বাইরে বেরিেয় চলে যায়।

গাড়ি পুকুরে পড়ার শব্দ আশেপাশের লোকজন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে খোঁজ শুরু করেন। পিছন থেকে আসা বড় গাড়ির যাত্রীরাও নেমে একসঙ্গে পুকুরে নেমে উদ্ধার করার চেষ্টা করে। তাতে কোনও লাভ হয়নি। দমকল গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করার আগেই ওই যাত্রীদের প্রত্যেকেই মারা যায়। বাড়ির লোকজন বার বার বলছিলেন, “বড় গাড়িতে একসঙ্গে গেলে হয়তো এই ঘটনা ঘটত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Death Pond Marriage Ceremony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE