Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ: বাজি পোড়াতে হবে রাত ৮-১০টার মধ্যে

শব্দ নিয়ে আশঙ্কা 

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, শহরের বায়ূ দূষণ মাপতে তিনবাতি এলাকায় একটি ‘মনিটরিং স্টেশন’ রয়েছে। আর একটি সেবক রোডে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে। শনিবার থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে মাটিগাড়ায় পর্ষদের অফিসে।

নিয়ম ভেঙে: বাজারের অলিগলিতেই মিলছে শব্দবাজি। শনিবারই শিলিগুড়ি শহরের নানা জায়গায় ফেটেছে শব্দবাজি। ছবি: স্বরূপ সরকার

নিয়ম ভেঙে: বাজারের অলিগলিতেই মিলছে শব্দবাজি। শনিবারই শিলিগুড়ি শহরের নানা জায়গায় ফেটেছে শব্দবাজি। ছবি: স্বরূপ সরকার

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:২৮
Share: Save:

প্রতিবছরই দীপাবলির সময়ে শব্দবাজি ফাটানোর কমবেশি অভিযোগ ওঠে শিলিগুড়িতে। প্রতিবারই শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, উৎসবের ক’দিন নিষিদ্ধ বাজির আওয়াজে কান ঝালাপালা হয় শহরবাসীর। এ বারও সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের একাংশ।

শব্দবাজির দাপট সামলাতে কয়েক বছর আগে শিলিগুড়ির থানাগুলোকে ‘নয়েজ লেভেল মিটার’ দেওয়া হয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের তরফে। সেগুলির বেশিরভাগই নষ্ট বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। তা ছাড়া ওই যন্ত্রে শব্দ মাপা গেলেও তা পরে আদালতে প্রমাণ করা যায় না। এই সমস্যা এড়াতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ থেকে অত্যাধুনিক ‘নয়েজ লেভেল মিটার’ দেওয়ার কথা ঠিক হয়। ওই যন্ত্রে ‘জিপিএস সিস্টেম’ এবং ‘প্রিন্টার’ থাকার কথা। ওই যন্ত্র থেকে নথিও মিলবে। যা মামলার সময় পেশ করা যাবে। অথচ ওই যন্ত্র সরবরাহের টেন্ডার সম্পন্ন করতে পারেনি পর্ষদ। যার ফলে এই বছর শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন প্রশাসন ও বাসিন্দারা। পর্ষদের শিলিগুড়ি আঞ্চলিক শাখার একটি সূত্রের দাবি, পুলিশকে জানানো হয়েছিল বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রচার করতে। তার খরচ পর্ষদের তরফে দেওয়ার কথা। দেওয়া হয়েছে লিফলেটও। অথচ মাইকিং বা লিফলেট বিলি চোখে পড়েনি বলে পর্ষদের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ।

অবস্থা এমন যে মহকুমা প্রশাসনও জানেন না শিলিগুড়ি শহরে শব্দবাজি রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মহকুমাশাসক সুমন সহায় বলেন, ‘‘পুলিশ কমিশনারেট গঠিত হওয়ার পরে তারাই বিষয়টি দেখেন। প্রশাসনের তরফে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপার নেই।’’

শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ এখনও পর্যন্ত অন্তত ৭০০ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক করেছে। নজরদারি চলছে।’’ মাইকিং বা লিফলেট বিলি থানাগুলো জানে বলে জানান তিনি। পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের দাবি, পুলিশের ধরপাকড়ে যে পরিমাণ শব্দবাজি আটক হয়েছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে শহরে বিপুল পরিমাণে নিষিদ্ধ শব্দবাজির লেনদেন চলছে। অভিযোগ, নয়াবাজারে অনেক বাজি ব্যবসায়ী শব্দবাজি মজুত করেছেন। সেখান থেকেই তা শহর ও লাগোয়া এলাকায় ছড়াচ্ছে। শনিবারই হায়দরপাড়া, হাকিমপাড়া, মাল্লাগুড়ি ও শহরের নানা এলাকায় শব্দবাজি ফাটতে দেখা গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিবারই ধরপাকড় হয় কিন্তু উৎসবের দিনে একইরকম ভাবে শব্দবাজির দাপট চলে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, শহরের বায়ূ দূষণ মাপতে তিনবাতি এলাকায় একটি ‘মনিটরিং স্টেশন’ রয়েছে। আর একটি সেবক রোডে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে। শনিবার থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে মাটিগাড়ায় পর্ষদের অফিসে। তিনদিন বেলা ৫টা-রাত ১২টা পর্যন্ত তা খোলা থাকবে। রবিবার দীপাবলির দিন এবং তার পরদিন পর্ষদের তিন সদস্যের একটি দল রাত ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে নজরদারি চালাবে। যদিও তাতে কোনও কাজ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja 2019 Crackers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE