সুনসান: পসরা সাজানো তবুও ফাঁকা বাজার। শিলিগুড়ি। নিজস্ব চিত্র
উত্তরের আকাশ জুড়ে ছড়িয়েছে মন্দার মেঘ। গত ছ’মাসে যে ভাবে কমেছে নিত্য প্রয়োজনীয় ও শিল্পজাত নানা দ্রব্যের বিক্রি এবং উৎপাদন তাতে মাথায় হাত পড়েছে ছোট ব্যবসায়ী থেকে কারখানা মালিক সকলেরই। একাধিক বণিক সংস্থার সমীক্ষায় সেই ছবি উঠে এসেছে। এই সংস্থাগুলির দাবি, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমার ফলেই এমন পরিস্থিতি। গত ছ’মাসের বাজার সমীক্ষার বিস্তারিত তথ্য দিয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাচ্ছে একাধিক বণিক সংস্থা। রিপোর্ট তৈরির কাজ শেষ করেছে নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশন ও উত্তরবঙ্গের ২২টি ব্যবসায়ী সংগঠনের যৌথমঞ্চ ইস্টার্ন এবিসি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়।
আর্থিক মন্দা কাটাতে সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে কর ছাড়-সহ নানা সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে উত্তরের এই দুই বণিকসভার কর্তাদের দাবি, উত্তরবঙ্গের ছোট কারখানার মালিক, ব্যবসায়ীরা কেন্দ্রের এই সুবিধার আওতায় পড়বে না। ছোট ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন না। তাই, তাঁদের পরিস্থিতির কথা ভেবে যাতে কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ করে, সেই দাবি তুলেই চিঠি পাঠিয়েছেন— জানান ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ পাল। তিনি বলেন, ‘‘বড় কর্পোরেট সংস্থা আর উত্তরবঙ্গের ছোট কারখানার মালিক বা ব্যবসায়ীদের মধ্যে আকাশপাতাল তফাত। তা সত্ত্বেও গড় হিসেবে ছোট ব্যবসায়ীদের কর্পোরেট সংস্থাগুলির মতোই একই হারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর দিতে হচ্ছে। অথচ ছাড়ের বেলায় কর্পোরেট সংস্থাকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের নীতি তৈরির ক্ষেত্রে ছোট ব্যবসায়ী সংস্থাগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।’’
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে শিল্পের ক্ষেত্রে যে সব ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তা হিমালয় পর্বতমালার একটি অংশে অবস্থিত দার্জিলিং, কালিম্পং, তরাই ও ডুয়ার্সের অংশ বিশেষকেও দেওয়া হোক, দাবি তুলেছেন সুরজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘একই নীতিতে কেন্দ্রীয় সরকার অন্য রাজ্যগুলিতে ছাড় দিলেও উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই ছাড় দিচ্ছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ওই বিষয়ে সরব হওয়া জরুরি।’’
বুধবার শিলিগুড়ি হার্ডওয়ার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে দুই বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ ও রাজু বিস্তার সঙ্গে বৈঠক করেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সুরজিৎ জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের সমস্যার কথা সাংসদে তুলে ধরার জন্য তাঁদের অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ইস্টার্ন এবিসির কাউন্সিল সদস্য গোপাল খোরিয়া বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের অবস্থা এমনিতেই খুব খারাপ। সেই অর্থে বড় কোনও শিল্প নেই। ছোট ছোট যে সব কারখানা আছে, গত ছ’মাসের মন্দায় তাদের অনেকগুলি ইতিমধ্যেই আংশিক উৎপাদন শুরু করেছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এগুলির মধ্যে অনেক কারখানাই বন্ধ হয়ে যাবে বলে আমাদের সকলের আশঙ্কা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy