Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিষাক্ত পুকুরের জল, মৃত্যু

প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে কেউ গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। রবিবার থেকে এলাকার ব্যাপক অংশের মানুষ ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কৃষ্ণ ওরাওঁয়ের মৃত্যু হলে নড়ে বসে ব্লক প্রশাসন।

চিকিৎসা: ফুলতলা গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্প। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসা: ফুলতলা গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্প। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৩:০৯
Share: Save:

কীটনাশকে বিষাক্ত পুকুরের জল ব্যবহার করে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছে পুরো একটি পাড়ার বাসিন্দারা।

রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের গাঙ্গুরিয়া অঞ্চলের ফুলতলা এলাকার ঘটনা। রাতেই ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত কৃষ্ণ ওরাওঁ (৪০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত অন্তত ৪০ জন। তাদের স্থানীয় রসিদপুর ব্লক হাসপাতাল এবং গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

বংশীহারির বিডিও অতুলকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘‘পুকুরের দূষিত জল থেকে রোগ ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। এলাকায় পানীয় জলের অভাব মেটাতে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করা হচ্ছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘এক জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বাকিদের চিকিৎসা চলছে। এলাকায় মেডিক্যাল টিম গিয়ে আক্রান্ত পরিবারগুলির সদস্যদের চিকিৎসা শুরু করেছে।’’ তিনি জানান, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করে পুরো বিষটির উপর নজর রেখেছেন।

লিজ নেওয়া ব্যক্তিগত মালিকানার ওই পুকুরে গত সপ্তাহে মাছ চাষ শুরু করেন মৎস্যজীবীরা। এরপর পুকুরের জলে বিষাক্ত কীটনাশক ছড়িয়ে দেন তাঁরা। তাতে পুকুরে থাকা পোকামাকড়ের সঙ্গে ছোট পোনামাছ খেয়ে ফেলে এমন শোল, সাঁটি, চ্যাংয়ের মতো রাক্ষুসে মাছ মরে ভেসে ওঠে। কিন্তু বেশ কিছু দিন ওই জল ব্যবহার করা যাবে না বলে মৎস্যজীবীদের একাংশ গ্রামবাসীদের সতর্ক করেছিলেন বলে দাবি। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা বরাবরের মতো স্নান থেকে নানা কাজে ওই পুকুরের জল ব্যবহার করতে থাকলে গত বৃহস্পতিবার এক দু’জন করে পেটের রোগে অসুস্থ হতে থাকেন। প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে কেউ গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। রবিবার থেকে এলাকার ব্যাপক অংশের মানুষ ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কৃষ্ণ ওরাওঁয়ের মৃত্যু হলে নড়ে বসে ব্লক প্রশাসন।

এলাকার বধূ স্মিতা ওরাওঁ থেকে প্রবীণ বাসিন্দা পান্ডে হেমব্রম বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে পুকুরে বিষাক্ত কীটনাশক দেওয়া হয়। সেই জল ব্যবহার করে এই অবস্থা। গ্রামে প্রয়োজনীয় নলকূপ নেই।’’ তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা পুকুরের জল ব্যবহার করেন বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। বিডিও অতুলকৃষ্ণবাবু জানান, ‘‘ওই পুকুরের জল পরীক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে। এলাকায় জলের অভাব মেটানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE