Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
MLA

তৃণমূল ছাড়ার ইঙ্গিত সত্যেনের

২০১১ সালে প্রথমবার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে গঙ্গারামপুর থেকে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছিলেন সত্যেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নীহার বিশ্বাস 
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২০ ০৪:১৮
Share: Save:

কোচবিহারের মিহির গোস্বামীর পর এ বার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায় বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন। সত্যেনের হুমকি, "দল যদি আমার গুরুত্ব না বোঝে তাহলে আমিও বিদ্রোহ করব।" দল যদি এ বার তাঁকে বিধানসভার টিকিট না দেয় তাহলে দল ছাড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তৃণমূলের এসসি-এসটি মোর্চার এই জেলা সভাপতি। সত্যেনের এমন ঘোষণায় দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। চর্চাও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

২০১১ সালে প্রথমবার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে গঙ্গারামপুর থেকে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছিলেন সত্যেন। বিধায়ক হবার পরই তৎকালীন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিপ্লব বিরোধী গোষ্ঠীতে ‘নাম’ লিখিয়েছিলেন এই নেতা। বিপ্লবের পর অর্পিতা ঘোষ জেলা সভাপতি হলে তার সঙ্গেও ‘সু-সম্পর্ক’ তৈরি হয়নি সত্যেনের। বর্তমান জেলা সভাপতি গৌতম দাসের সঙ্গেও সম্পর্ক খুব ‘মধুর’ নয় তাঁর। কারণ, গত বিধানসভা নির্বাচনে গঙ্গারামপুর থেকে সত্যেনের বিরুদ্ধেই বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হয়ে সত্যেনকে হারিয়েছিলেন গৌতম। সেই গৌতম কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে জেলা সভাপতি হতেই ‘ক্ষুব্ধ’ তিনি।

সত্যেনের অভিযোগ, তিনি তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দল করলেও দল গুরুত্ব দেয়নি। সেই ধারা এখনও বজায় রয়েছে বলে দাবি সত্যেনের। তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রতি অনেক অন্যায়, অবিচার হয়েছে৷ অনেক অপমানিত হয়েছি। কত দিন বঞ্চনার শিকার হব? তার পরেও দল করছি। এর পর যদি অবিচার হয় তা হলে আমি বিদ্রোহ করব। দল যদি বিধানসভার টিকিট না দেয় তাহলে আমি একশোবার অন্য কিছু ভাবব। দলকে আমার গুরুত্ব বুঝতে হবে। এটা আমি রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, জেলা সভাপতি গৌতম দাস সবাইকেই জানিয়েছি।’’

বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে দলের প্রতি সত্যেনের এই ‘কড়া’ বার্তার কারণ কি? পর্যবেক্ষকদের মতে, গঙ্গারামপুরের কংগ্রেস বিধায়ক গৌতম দল ছেড়ে তৃণমূল যোগ দেওয়ার পর এখন জেলা সভাপতির পদে রয়েছেন। কাজেই গঙ্গারামপুর থেকে সত্যেনের টিকিট পাওয়া কার্যত অসম্ভব। জেলার বাকি আসনগুলিতেও সত্যেনের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই দলীয় সূত্রে খবর। এই অবস্থায় নির্বাচনের আগে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে বার্তা দিলেন সত্যেন, এমনটাই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।

যদিও বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়নি বলেই তিনি জানিয়েছেন। এ দিকে সত্যেনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল। জেলা সভাপতি গৌতম বলেন, ‘‘উনি বংশীহারি ব্লকের সভাপতি আবার এসসি-এসটি মোর্চার জেলা সভাপতি। গুরুত্ব আছে বলেই দু’টো পদে রাখা হয়েছে। আর কাকে টিকিট দেবে সেটা দল কাজের নিরিখে সিদ্ধান্ত নেবে।’’ বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূলে ভাল মানুষরা কাজ করতে পারেন না। অনেকেই তাই দল ছেড়েছেন। আমাদের দরজা খোলা আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

MLA Satyen Roy TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE