অসহায়: ঝড়ে বিধ্বস্ত ডেহুটি গ্রাম। নিজস্ব চিত্র
রাতে সবাই ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। তারই মধ্যে হঠাৎ শুরু হল ঝড়। সেই ঝড়ের তাণ্ডবে ছাদের টিন উড়ে গিয়ে ধাক্কা মারল গাছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সবাই তখন ফাঁকা মাঠে আশ্রয় নিয়েছেন। এর পরে শুরু হল শিলা বৃষ্টি। গাছতলায় আশ্রয় নিলেন তাঁরা। ভেঙে পড়ল গাছের ডাল। সেই ডালের আঘাতে জখম হলেন বছর পঁয়তাল্লিশের সোপেন মুর্মু। চাকুলিয়া থানার গোয়ালপোখর ২ ব্লকের সূর্যাপুর ২ গ্রামের ডেহুটি আদিবাসী গ্রামের ঘটনা। টানা তিরিশ মিনিটের এই ঝড় শিলাবৃষ্টিতে গ্রামের প্রায় ১০০ আদিবাসী পরিবার বিধ্বস্ত। শ্যামলাল, মাটরু হাঁসদাদের কথায়, ‘‘ঘরের টিন উড়ে গেছে। রাত থেকে অসহায়ের মতো আমরা পড়ে আছি। প্রশাসনের দেখা নেই।’’ তবে দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছেন পড়শি গ্রামের বাসিন্দারা।
এই ঝড় শুধু এই গ্রামেই থেমে থাকেনি। গ্রামের পাশে কিছুটা দূরে ডেহুটি গ্রামীণ বাজারে প্রায় ৫০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতি হয়েছে ভূট্টা এবং আনাজের। রাস্তার মধ্যেই ভেঙে পড়ে আছে গাছপালা। সকাল থেকে চাকুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। ব্লক প্রশাসন তরফে জানানো হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের তালিকা করা হচ্ছে। এখনও বলা সম্ভব নয়। তবে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকা।
ছোট এই আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দারা রাত থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন। অভিযোগ, দিনভর তাঁদের খোঁজ নিতে প্রশাসনের কেউ যাননি। অবশ্য ওই গ্রামের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশীরা। ঝড়ে বিপর্যস্তদের দুপুরে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ান এলাকার সরফরাজ, সরোবর, তাপস, অজয়রা। প্রতিবেশীদের সাহায্যে মুগ্ধ সোপেনরা বলেন, ‘‘যে কাজটা গ্রামের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের কথার কথা, সেই কাজটা এলাকার প্রতিবেশী যুবকেরা করে দেখালেন।’’
সরফরাজ বলেন, ‘‘একজন প্রতিবেশীর পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের দায়িত্ব। তবে এমন ঝড়ের মোকাবিলা করতে হবে, তা ভাবিনি।’’ জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকবে প্রশাসন। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারেও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy