Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বোনেদের সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে খুন

বোনেদের চিৎকারে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ছুটে আসেন আশপাশের চা বাগানের শ্রমিকেরা। জিৎবাহনকে মাদারিহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বাঁচানো যায়নি তাঁকে। রাস্তাতেই মারা যায় জিৎবাহন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাদারিহাট শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৪৫
Share: Save:

দুই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে জলসা দেখতে গিয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জিৎবাহন ওরাওঁ। সোমবার রাতের ঘটনা।

ফিরতে ফিরতে রাত দেড়টা বেজে গিয়েছিল তাঁদের। চা বাগানের রাস্তা ধরে বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছিল তারা যাওয়ার সময় তাঁদের আচমকা ঘিরে ধরে কয়েকজন দুষ্কৃতী। তাদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় জিৎবাহনের। তার বোনেরা বাধা দিতে এগিয়ে গেলে দুষ্কৃতীদের হাতে নিগৃহীত হয় তারা। বোনেদের সম্ভ্রম বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে জিৎবাহন। দুষ্কৃতীরা তার বুকের দু’দিকে দু’টি ধারালো অস্ত্র সোজা বিঁধিয়ে দেয়।

বোনেদের চিৎকারে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ছুটে আসেন আশপাশের চা বাগানের শ্রমিকেরা। জিৎবাহনকে মাদারিহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বাঁচানো যায়নি তাঁকে। রাস্তাতেই মারা যায় জিৎবাহন।

সোমবার রাত থেকেই হান্টাপাড়া এলাকায় শোক ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। ওই দুই কিশোরী জিৎবাহনের সম্পর্কে বোন। একই পাড়ায় থাকে সকলে।

তুলসীপাড়া চা বাগান এলাকার বাসিন্দা জিৎবাহনের কয়েকজন প্রতিবেশীর বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা লাগোয়া গেরগেন্দা চা বাগান থেকে এসেছিল। সন্দেহ, অভিযুক্তদের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল জিৎবাহনের।

রাতেই হান্টাপাড়া চা বাগানে তদন্তে যায় পুলিশ। জিৎবাহন ডিমডিমা হাইস্কুলের ছাত্র ছিল। স্কুল ছুটি থাকলেও তার অনেক সহপাঠীও তাদের বাড়িতে আসে এ দিন। তারাও দ্রুত ঘটনার কিনারা দাবি করেছে। জিৎবাহনের বাবা জয়প্রকাশ ওরাওঁ বলেন, “আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে তাদের কঠোর সাজার দাবি করেছি।”

মাদারিহাটের আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা বিষ্ণু লাকরাও বলেন, “পুলিশকে দু’দিন সময় দেওয়া হয়েছে। দু’দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের ধরতে না পারলে থানা ঘেরাও ও পথ অবরোধ করে আন্দোলন করা হবে।”

জয়গাঁর এসডিপিও অনিরুদ্ধ ঠাকুর জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মঙ্গলবার ভোর থেকেই অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। এলাকা থেকে অনেক পুরুষ পালিয়ে গিয়েছেন। তবে অভিযুক্তেরা পালিয়ে বাঁচবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE