Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

গেটে পতাকা, বন্ধ স্কুল

একদিন, দু’দিন নয়, এক তৃণমূল নেতার গ্রেফতারির প্রতিবাদে  টানা তিনদিন ধরে বন্‌ধ চলে মোয়ামারিতে। তারই জেরে পড়াশোনা ও শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত কাজই শিকেয় ওঠে। শুক্রবার তাই বন্‌ধ শেষ হতেই হইহই করে স্কুলে গিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪
Share: Save:

পতাকা দিয়ে আটকানো ছিল গেট। তা সরিয়ে স্কুলে ঢোকার সাহস পাননি শিক্ষকরা। তাই পড়ুয়াদেরও বইয়ের ব্যাগ কাঁধে ফিরে আসতে হয় স্কুলের দরজা থেকে। পড়াশোনা বন্ধ। বন্ধ নতুন ক্লাসে ভর্তি। বন্ধ ছিল মিড-ডে মিলও। তাই স্কুলের সামনে ঘোরাঘুরি করে খালি থালা হাতে শুকনো মুখে ফিরে যেতে হয় খুদেদেরও। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির সামনেও একই ছবি। এ ভাবেই কোচবিহারের মোয়ামারিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল ভুগল পড়ুয়ারা।

একদিন, দু’দিন নয়, এক তৃণমূল নেতার গ্রেফতারির প্রতিবাদে টানা তিনদিন ধরে বন্‌ধ চলে মোয়ামারিতে। তারই জেরে পড়াশোনা ও শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত কাজই শিকেয় ওঠে। শুক্রবার তাই বন্‌ধ শেষ হতেই হইহই করে স্কুলে গিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। নতুন ক্লাসে ভর্তিও হয়েছ়েন অনেকে। ডিসেম্বরে পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশের পর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সব স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে দেওয়া হয়। সেখানে তিনদিন ওই স্কুল বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে সবাইকে। দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, “তিনদিন থেকে সব বন্ধ। এ দিনও ভর্তি হতে পারিনি।” স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে ভর্তি নেওয়া হবে।

মোয়ামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ময়নাগুড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “নতুন বছর পড়েছে। এখন নতুন ক্লাসে ভর্তি চলছে। বন্‌ধ থাকায় এই তিনদিন স্কুল খুলতে পারিনি আমরা।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, “স্কুলের সামনে পতাকা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। ওই পতাকা খুলে ভিতরে ঢুকলে কী হতে পারে, বুঝতেই পারেন। তাই আমরা স্কুলের সামনে থেকে ঘুরে গিয়েছি।” স্থানীয় তৃণমূল নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা জোর করে কিছুই করেননি। এলাকার তৃণমূল নেতা চন্দন গোস্বামী বলেন, “আমরা জোর করে কোথাও কিছু করিনি। মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে বন্‌ধে সামিল হয়েছে।” তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি খোকন মিয়াঁ অবশ্য ওই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “শিক্ষাকেন্দ্র, বাজার বন্ধ করে বন্‌ধ আমরা সমর্থন করি না। দলীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”

গত সপ্তাহে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয় কোচবিহারের মোয়ামারি। অভিযোগ, ওই অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি বসিরুদ্দিন মিয়াঁ অনুগামীদের নিয়ে কোচবিহার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী খাদিজা বিবির স্বামী সহ ৫ জনকে মারধর করে। তাতে বসিরুউদিন মিয়াঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। এরপরেই মঙ্গলবার থেকে টানা তিনদিনের বন্‌ধ ডাকে তৃণমূল। অভিযোগ, দলের পক্ষ থেকে বন্‌ধের নোটিস তৈরি করে তা স্কুলে স্কুলে টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE