Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছ’দিন পার, অধরা দোষী

কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি হয়েছে। শীঘ্রই গ্রেফতার হবে বলে আশা করছি।”

নার্সিংহোমে ভর্তি মাজিদ আনসারি

নার্সিংহোমে ভর্তি মাজিদ আনসারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে ছ’দিন কেটে গেলেও কলেজ ছাত্র মাজিদ আনসারির উপরে হামলার ঘটনায় একজনকেও ধরতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট তথ্য ও মোবাইল টাওয়ার লোকেশন করে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সফলতা মেলেনি।

অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে অনলাইনে থাকছেন মাঝে মধ্যে। পুলিশ অবশ্য সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে। মাজিদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সাতদিন হয়ে গেল ওই ঘটনার। পুলিশ যদি কাউকে গ্রেফতার করতে না পারে তা হলে তো আবারও এমন হতে পারে। প্রয়োজনে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি হয়েছে। শীঘ্রই গ্রেফতার হবে বলে আশা করছি।” মাজিদের বাবা মুস্তাফি আনসারি বলেন, “ছেলে ভাল হলে প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাব। কেন এত বড় অপরাধ করার পরেও কেউ গ্রেফতার হবে না। সব জানাব। তাঁর উপর আমাদের ভরসা আছে।”

শুক্রবার কোচবিহার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ আনসারির উপরে হামলা চালায় একদল যুবক। স্টেশন মোড়ের কাছে মাজিদকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। একটি গুলি মাজিদের পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। মাজিদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কোচবিহার কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক। যে যুবকদের বিরুদ্ধে তাঁকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে তাঁরাও টিএমসিপি কর্মী । ওই ঘটনায় তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে । যদিও টিএমসিপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরী তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “কলেজের বাইরে একটি ঘটনা। তাঁর সঙ্গে ছাত্র রাজনীতির সম্পর্ক নেই। তবে যারা কলেজ ছাত্রকে গুলি করেছে তাঁদের গ্রেফতারের দাবি আমরাও জানিয়েছি।”

কেন গ্রেফতার নেই? তা নিয়েই দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হচ্ছে রাজ্যের শাসক দলে। এক পক্ষের অভিযোগ, তৃণমূলেরই একটি অংশ অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। না হলে স্টেশন মোড়ের ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময়ই তারা পুলিশের হাতে ধরা পড়ত। তাঁদের দাবি, যেখানে গুলি করা হয়েছে, সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার তিনটি রাস্তা রয়েছে। দুটি প্রধান সড়ক ধরে। সে পথে দুষ্কৃতীরা যায়নি। গলির রাস্তা ধরে বিবেকানন্দ স্ট্রিট হয়ে পিলখানার মধ্যে দিয়ে অভিযুক্তরা পালায়। সেক্ষেত্রে ওই পথে অসম ও দিনহাটা যাওয়া খুব সহজ। আধ ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট গাড়িতে গেলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে দুই জায়গায়। একটু গুরুত্ব দিলে ওই আধ ঘন্টার মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা যেত। সেটাও না হলে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা এক-দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তাদের হদিশ মিলত বলে অনেকের মত। পুলিশ অবশ্য ওই যুক্তি মানতে নারাজ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পুলিশ কারও কথায় চলছে না। অভিযুক্তদের হদিশ ঠিক বের করবে। কিন্তু তা একটু সময়ের ব্যাপার। সে পথেই এগোনো হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Majid Ansa Police Arrest Suspect
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE