কুমারগঞ্জ-তপন রাস্তায় সেতুর উপর দিয়েই বইছে জল।
এক রাতের বৃষ্টিতে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ও কুমারগঞ্জ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি ডুবে গিয়েছে। জল ঢুকে মাটির ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। খাঁড়ি উপচে রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় সোমবার সকালে তপনের আউটিনা অঞ্চলের লস্করহাট থেকে তেলিঘাটা এলাকায় রাজ্য সড়কের বেশ কিছু জায়গায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েন। বেলা বাড়লে রাস্তার উপর থেকে জল সরে গেলেও নিচু এলাকার বাড়িঘর ফের জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, চাষের জমি ডুবে গিয়ে কোথাও পাঁচ ফুট জল জমে গিয়েছে। পুকুর ও খাঁড়িতে পচানোর জন্য রাখা প্রচুর পাট ভেসে গিয়েছে। আউটিনা পঞ্চায়েতের প্রধান চন্দনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ায় খলসি, কামদেববাটি এবং এলেন্দারি এলাকা থেকে ২৫ জন বাসিন্দা সাহায্যের আবেদন করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখা হচ্ছে।’’
জলের তলায় ধানখেত। ছবি: অমিত মোহান্ত।
তপনের বিডিও জর্জ লেপচা বলেন, ‘‘অতিবৃষ্টিতে মালঞ্চা এলাকার যদুবাটি এবং আউটিনা এলাকার কিছু জায়গা প্লাবিত হয়। তবে বেলা বাড়তে জল নেমে যায়। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে নতুন করে ভারী বৃষ্টি না হলে ভয়ের কিছু নেই। বরং অনাবৃষ্টির জেরে দক্ষিণ দিনাজপুর গত ১৫ দিন ধরে তীব্র দাবদাহের কবলে পড়েছিল। সদ্য আমন ধানের চারা বোনার পর এলাকার পুরো জমি জলে ডুবে যাওয়ায় তপনের আউটিনা, অশোকগ্রাম এবং কুমারগঞ্জের সাফানগর সংলগ্ন বাউল বোল্লা, রামপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ধানের জমি প্লাবিত হয়ে পড়ায় চাষিরা উদ্বিগ্ন। ওই সমস্ত এলাকার অন্তত ৫০টি কাঁচা বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার রাত ৮টা থেকে জেলা জুড়ে টানা বৃষ্টি শুরু হয়। রাতের মধ্যে টাঙন নদীর জল দু’কূল ছাপিয়ে খাঁড়ি দিয়ে ঢুকে পড়ে। খাঁড়ি উপচে বৃষ্টির জলে এলাকাগুলি প্লাবিত হয়। তপন ব্লকের আউটিনা পঞ্চায়েত এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি ছিল। তপন লাগোয়া বালুরঘাট ও কুমারগঞ্জের কিছু এলাকাতেও রাতে একটানা ভারী বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পতিরামের মাঝিয়ান কৃষিফার্মের আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, জেলা জুড়ে গড়ে প্রায় ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তপনের কিছু অংশে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেশি ছিল।
এ দিন তপনের আউটিনা অঞ্চলের তেলিঘাটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পুর হাটের দোকানঘর প্রায় তিন ফুট জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফলে হাট লাগোয়া বাসিন্দারা যোগাযোগে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। নৌকো ভরসা করে সদর পঞ্চায়েত ও বাজার এলাকায় তাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এলাকার জলমগ্ন বাসিন্দা হরেন বর্মন, বিশু পাহানেরা বলেন, ‘‘রাত ৮-১২টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা মুষলধারে বৃষ্টি হয়। মাঝারি বৃষ্টি পরেও চলতেই থাকে। সব ভেসে গিয়েছে আমরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy